এশিয়ায় প্রথম যে ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ
এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) নতুন তহবিল থেকে প্রথম ঋণ পাবে। তবে বিশ্বে প্রথম এ ঋণটি পায় বার্বাডোজ, তারপর কোস্টারিকা, আর সর্বশেষ রুয়ান্ডা। এরপরই ঋণ পাওয়ার তালিকায় রয়েছে আরও পাঁচটি দেশ, যার মধ্যে সবার ওপরে বাংলাদেশের নাম। নতুন এ ঋণ তহবিলের নাম স্থিতিস্থাপকতা ও স্থায়িত্ব সহায়তা বা Resilience and Sustainability Facility (RSF)। ১৩ এপ্রিল ২০২২ IMF’র বোর্ড এ তহবিলের অনুমোদন দেয় আর কার্যকর হয় ১ মে, ২০২২। স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিতে রয়েছে, তাদের জন্যই এ তহবিলের সৃষ্টি। যেসব দেশের আয় কম, ঋণ পরিশোধের দায় বেশি, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়, এতে উন্নয়ন ব্যয়ে ঘাটতি পড়ে, তাদের জন্যই এ তহবিল।
বাংলাদেশ IMF’র কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে। এর মধ্যে RSF থেকে চেয়েছে ১৩০ কোটি ডলার। নিয়ম হচ্ছে, IMF’র কোনো একটি ঋণ কর্মসূচির মধ্যে থাকলেই কেবল RSF থেকে সহায়তা পাওয়া যাবে। ঋণের দেওয়া হবে ১৮ মাসে। পরিশোধের সময় ২০ বছর, আর এর বাড়তি সময় বা গ্রেস পিরিয়ড হচ্ছে সাড়ে ১০ বছর। এই ঋণের সঙ্গেও শর্ত থাকবে। ঋণ অর্থ পেতে IMF’র ভাষায় বেশ কিছু উচ্চ মানের সংস্কার কর্মসূচি নিতে হবে। এর মধ্যে থাকবে দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা করার মতো কর্মসূচি।
ভুটানে আমদানি-রপ্তানি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের পর এবার ভুটান থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হবে। ২১ ডিসেম্বর ২০২২ ভুটান থেকে আলু ও সুতা ছাড়া সব ধরনের পণ্য আমদানি এবং সব পণ্য (নিষিদ্ধ ছাড়া) রপ্তানির অনুমতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এরপর ৩ জানুয়ারি ২০২৩ প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR)। NBR’র তালিকা অনুযায়ী ভুটান থেকে যেসব পণ্য আমদানি করা যাবে— গবাদিপশু, মাছের পোনা, তাজা ফলমূল, গাছগাছড়া, বীজ, চাল, গম, পাথর (স্টোন অ্যান্ড বোল্ডার্স), কয়লা, রাসায়নিক সার, চায়না ক্লে, কাঠ, টিম্বার, চুনাপাথর, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, আদা, বলক্লে, কোয়ার্টজ, শুঁটকি মাছ, সাতকরা, আগরবাতি, জিরা, রাবার, মেইজ, স্টোন বোল্ডার, সয়াবিন বীজ, বাঁশের পণ্য, অর্জুন ফ্লাওয়ার (ব্রোম), সিএনজি স্পেয়ার পার্টস, কাজুবাদাম, কাগজ, চিনি, জেনারেটর, ভাঙা কাচ, চকলেট, বেবি ওয়াইপার, কনফেকশনারি দ্রব্যাদি, বিটুমিন, পান, টমেটো, মেথি, শুকনা তেঁতুল, শুকনা ফুল, ফ্লাই অ্যাশ, সব ধরনের খৈল, ফায়ার ক্লে, থান ক্লে, মার্বেল চিপস, তিল, শর্ষে, সুপারি, স্ট্র্যাপ অ্যান্ড ওয়েস্ট (আয়রন/স্টিল) ও গ্রানাইট স্ল্যাব।
নতুন মুদ্রানীতি
১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করে। গভর্নর হিসেবে আব্দুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই তার প্রথম মুদ্রানীতি ঘোষণা। এবারের মুদ্রানীতিকে ‘সতর্কমূলক’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। মুদ্রানীতিতে ওভারনাইট রেপো সুদহার বিদ্যমান বার্ষিক ৫.৭৫% থেকে ৬% এবং নীতি সুদহার করিডর যৌক্তিকীকরণের উদ্দেশ্যে রিভার্স রেপো সুদহার বিদ্যমান বার্ষিক ৪% থেকে ৪.২৫% পুনঃনির্ধারণ করা হয়, যা ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩ হতে কার্যকর হয়। এছাড়া ব্যাংকের আমানতের ওপর বেঁধে দেওয়া সুদহার তুলে নেওয়া হয়। এতে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতের সুদহার কত হবে, তা নিজেরাই ঠিক করতে পারবে। আমানতের ন্যূনতম সুদহার ৬% থেকে বাড়িয়ে আরেকটু বেশি সুদ দেবে ব্যাংকগুলো। তবে ভোক্তা ঋণের সুদহার ৩% বাড়িয়ে ১২% পর্যন্ত করতে পারবে।
২০০৬ সাল থেকে বছরে দুই বার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়। ২০১৯ সাল থেকে সাবেক গভর্নর ফজলে কবির বছরে একবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। সাম্প্রতিক সময়ে IMF’র প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করেন। সফরকালীন বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করে বছরে চার বার মুদ্রানীতি ঘোষণার পরামর্শ দেন। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক পুনরায় বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়।