বাংলাদেশের সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় ২১৫.১০ কোটিঃ
করোনা মহামারির মধ্যেও প্রবাসীরা দেশে ব্যাপক হারে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, গত সেপ্টেম্বরে ২১৫.১০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। একক মাস হিসেবে যা দেশের ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এর আগে গত জুলাইয়ে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল, যার পরিমাণ ছিল ২৫৯.৯৫ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে), যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৭.৪১ কোটি ডলার বা ৪৫.৬৪% বেশি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১৪৭.৬৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। এদিকে চলতি অর্থবছরের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রেমিট্যান্স এসেছে ৬৭১.৩০ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল ৪৫২ কোটি ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪৮.৫৭%। ৮ অক্টোবর ২০২০ দেশে রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। প্রসঙ্গত, ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট প্রবাসী আয় ১,৮২০.৪৯ কোটি ডলার বা ১,৫৪,৭৪২ কোটি টাকা। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত অর্থ দেশে আসেনি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স ছিল ১,৬৪২ কোটি ডলার।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ১.৬%: (বিশ্বব্যাংক)
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (GDP) প্রবৃদ্ধি ১.৬% এ নেমে আসতে পারে এবং আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৩.৪% হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আর চলতি অর্থবছরে ৮.২% প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। করোনার কারণে অর্থনীতি কর্মসংস্থান, রপ্তানি, প্রবাসী আয়সহ বিভিন্ন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা বলছে বিশ্বব্যাংক। ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়। এ প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের চলমান অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ৮ দেশের মধ্যে ৫ দেশের ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
দেশ | প্রবৃদ্ধি | দেশ | প্রবৃদ্ধি |
ভুটান | ১.৮% | আফগানিস্তান | – ৫.৫% |
বাংলাদেশ | ১.৬% | শ্রীলঙ্কা | – ৬.৭% |
নেপাল | ০.৬% | ভারত | – ৯.৬% |
পাকিস্তান | – ১.৫% | মালদ্বীপ | – ১৯.৫% |
বৈদেশিক ঋণঃ
১২ অক্টোবর ২০২০ প্রকাশিত হয় বিশ্বব্যাংকের International Debt Statistics 2021 শীর্ষ প্রতিবেদন। এতে বাংলাদেশসহ স্বল্প ও মধ্য আয়ের ১২০টি দেশের এক দশকের বৈদেশিক ঋণের চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী-
বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণঃ
♦ ২০০৯ : ২,৫৩৭ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ২,১৫,৬৬২ কোটি টাকা।
♦ ২০১৯ : ৫,৭০৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ৪,৮৫,২৪৮ কোটি টাকা।
রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশঃ
বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশ-
♦ ভারত – ৮৩.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
♦ বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম – ১৮.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
IMF’র বৈশ্বিক অর্থনীতির পূর্বাভাসঃ
১৩ অক্টোবর ২০২০ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) বিশ্ব অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি নিয়ে World Economic Outlook প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯৫টি দেশের ২০২০, ২০২১ ও ২০১৫ সালের মোট দেশজ উৎপাদনের (GDP) প্রবৃদ্ধি নিয়ে পূর্বাভাস দেয়।
♦ সারা বিশ্বের গড় GDP প্রবৃদ্ধি হবে ৪.৪%।
♦ সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধির দেশ গায়ানা; ২৬.৫%।
♦ সবচেয়ে বেশি সংকোচনের দেশ লিবিয়া; ৬৬.৭%।
♦ ২০২০ সালে সার্কভুক্ত দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার (%) : বাংলাদেশ (৩.৮), ভুটান (০.৬), নেপাল (– ০.০), পাকিস্তান (-০.৪), শ্রীলংকা (-৪.৬), আফগানিস্তান (-৫.০), ভারত (-১০.৩), ও মালদ্বীপ (-১৮.৬)।
♦ ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু GDP হবে ১,৮৮৮ মার্কিল ডলার। আর ভারতের GDP হবে ১,৮৭৭ মার্কিন ডলার। মাথাপিছু GDP-তে ভারতকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া এবারই কিন্তু প্রথম নয়। ১৯৯১ সালেও একবার বাংলাদেশ এগিয়ে গিয়েছিল। তখন ভারতের GDP’র প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১%। এক বছর পর অবশ্য ভারত আবার এগিয়ে যায়।
আলোচিত বাংলাদেশ এশিয়ায় জাপানের সবচেয়ে বড়ো বিনিয়োগঃ
জাপানি গাড়ির বড়ো বাজার বাংলাদেশ। তাই জাপান বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে আটোমোবাইল কারখানা স্থাপনের চিন্তা করছে, যেটি হবে এশিয়ায় জাপানের সবচেয়ে বড়ো বিনিয়োগ। বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থবছরে জাপানে ১২০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে।