অর্থনীতি

ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩

২৮ মার্চ, ২০২৩ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। সংশোধিত খসড়া অনুযায়ী, যেসব পরিবর্তন আনা হয়-

দুর্বল ব্যাংক দেউলিয়া ঘোষণার বিধান দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিধান।

একই পরিবার থেকে পরিচালক হতে পারবেন তিনজন।

পর্ষদ সদস্য বা আত্মীয়দের জামানত দিয়ে ঋণ নিতে হবে।

ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাবেন না। কোনো ব্যাংক যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকা না পাঠায়, কেন্দ্ৰীয় ব্যাংক তখন ঐ ব্যাংককে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা জরিমানা করতে পারবে।

ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়ছে

২ এপ্রিল ২০২৩ বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় জানানো হয় ১ জুলাই ২০২৩ থেকে নতুন সুদহার কার্যকর হবে। তবে ঋণের সুদহার নির্ধারণ হবে ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে। ট্রেজারি বিলের সুদহারের সঙ্গে অতিরিক্ত ৩% পর্যন্ত যোগ করা যাবে। এখন ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ৬.৯৯%। ফলে এখনকার হিসাবে ঋণের সুদ হতে পারে সর্বোচ্চ ১০%। তবে ব্যাংক ঋণের সুদের সর্বোচ্চ হার কত হবে, বাংলাদেশ ব্যাংক তা প্রতি মাসে নির্ধারণ করবে। পাশাপাশি ছয় মাস মেয়াদি গড় সুদহারও জানাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২৩ সালের জুনে যে মুদ্রানীতি দেওয়া হবে, তাতে এ নিয়ে বিস্তারিত ঘোষণা থাকবে।

আলু রপ্তানিতে চুক্তি

আলু রপ্তানির লক্ষ্যে ৪ এপ্রিল ২০২৩ ঢাকায় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ২০২৪ সালে রাশিয়ায় দেড় থেকে দুই লক্ষ টন আলু রপ্তানি হবে। প্রসঙ্গত, ক্ষতিকর ব্রাউনরট রোগের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে আলু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাশিয়া। পরে আলু ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ সরকার পদক্ষেপ নেওয়ায় ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। এ কারণে রাশিয়ায় বাংলাদেশের আলু রপ্তানির একটি বিশাল দ্বার উন্মোচিত হয়। ২০১৫ সালে সর্বশেষ রাশিয়ায় ২০,০০০ টন আলু রপ্তানি হয়। দেশের প্রধান খাদ্যপণ্যের মধ্যে আলু একমাত্র উদ্বৃত্ত ফসল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) সর্বশেষ ২০২১ সালের উৎপাদন পর্যালোচনার তথ্য অনুযায়ী, আলু উৎপাদনে শীর্ষে চীন। আলু উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম আর এশিয়ায় তৃতীয়।

অর্থবছর

উৎপাদন (টন)

রপ্তানি (টন)

২০২০-২১

৯৮, ৮৭, ২৪২

৬৮,৭৭৩

২০২১-২২

১,০১,৪৪,৮৩৫

৭৮,৯১০

২০২২-২৩

১,১১,২৪, ৭০০

১৩,০০০*

খাজনা আদায়ে নতুন বর্ষ

২৮ মার্চ ২০২৩ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ভূমি উন্নয়ন কর আইন ২০২৩-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন আইন অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন মেয়াদে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হবে। আর্থিক বছরের সঙ্গে এটি সম্পৃক্ত করা হয়। বর্তমানে দেশে বাংলা বর্ষপঞ্জি (বৈশাখ-চৈত্র) অনুযায়ী, ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) আদায় করা হয়। অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হয়। এখন থেকে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হবে। কোনো ভূমির মালিক যদি একসঙ্গে তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর না দেয় তাহলে প্রথম বছর থেকে তৃতীয় বছর পর্যন্ত ৬.২৫% হারে জরিমানাসহ কর আদায় করা হবে। পূর্বে ২৫ বিঘা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ ছিল, এখনও সেটা বলবৎ রয়েছে। কেউ যদি ২৫ বিঘার বেশি জমির মালিক হয়ে থাকে, তাহলে পুরোটারই ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে। প্রতি বছর কার ভূমি উন্নয়ন কর কত, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তা নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেবেন। এ বিষয়ে যদি কারো আপত্তি থাকে তবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং জেলা প্রশাসকের কাছে আপত্তি দায়ের করতে পারবেন।

Leave a Reply