বাংলাদেশের অর্থনীতি
♦ সমাজসেবা অধিদপ্তর ও অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার তথ্য অনুসারে সরকারের ২৩টি মন্ত্রণালয়ের অধীন বর্তমানে দেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু রয়েছে— ১৪৩ টি।
♦ অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে – ৯৫ হাাজর ৫৭৪ কোটি টাকা।
♦ ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা — ৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
♦ রপ্তানিমুখী শিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক গঠন করেছে — এক হাজার কোটি টাকার তহবিল। (তহবিল থেকে ৫ – ৬ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন উদ্যোক্তারা)।
♦ কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের যোগ্য উদ্যোক্তাদের সহজে ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে দেশের প্রতিটি জেলায় প্রতিষ্ঠা করা হবে একটি করে — ‘এসএমই লিড ব্যাংক’।
♦ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছেন — ২ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলার মূল্যের।
♦ জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে — ১৯৬ কোটি ডলার। (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১৬ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা।)
♦ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থবছরে নেদারল্যান্ডসে পণ্য রপ্তানি করেছে — প্রায় ১১০ কোটি মার্কিন ডলারের।
♦ বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে তাজা ফল আমদানি হয়েছে—৩০ কোটি ডলার মূল্যের। (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা।)
♦ সরকার চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে নির্ধারণ করেছে — ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।
♦ ব্রিটেনের অর্থনৈতিক সংস্থা ‘সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ’-এর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিল ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। (২০২১ সালের সূচক অনুযায়ী ২০৩৫ সালে হবে ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ) আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান— তৃতীয়। (প্রথম— গায়ানা, দ্বিতীয়— দক্ষিণ সুদান)
♦ দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে— ৫ দশমিক ৮ শতাংশ (ভারতের পর দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় শীর্ষ)।
♦ ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে মানবাধিকার ও শ্রমমান-সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক রীতি মানতে হবে— ২৭টি। (এর মধ্যে ১৫টি আইএলও শ্রমমানের সঙ্গে সম্পর্কিত)
♦ বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ ব্যবসা সহজ করার সূচকে ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান- ১৬৮তম।
দক্ষিণ এশিয়ায় কেবল বাংলাদেশের জিডিপি বাড়ছে : জাতিসংঘ
কোভিড-১৯-এর কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সামান্য হলেও বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বাড়ছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয় নিয়ে কাজ করা বিভাগ ইউএন ডেসার (ইউনাইটেড নেশনস ডিপার্টমন্টে অব ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলাদেশের জিডিপি বেড়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের জিডিপি বাড়লেও ২০১৯ সালের পঞ্জিকা বছরের তুলনায় তা অনেক কমেছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক অর্থনীতি
♦ করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে পরিমাণ অর্থ প্রণোদনার প্রস্তাব দিয়েছেন — ১ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
♦ বিবিসির দেওয়া তথ্যমতে, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে — দশমিক ৫ শতাংশ।
♦ ২০২০ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে — ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
♦ বিশ্বব্যাংকের মতে, করোনার টিকাদান বিলম্বিত হলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি আটকে যেতে পারে — ১ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে।
♦ আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (আইএলও) মতে, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকার কারণে ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়েছে — ৮ দশমিক ৮ শতাংশ (২৫ দশমিক ৫ কোটি পূর্ণ কর্মঘণ্টার সমান।)।
♦ আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (আইএলও) মতে, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকার কারণে ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে আয় কমেছে — ৩ দশমিক ৭ লাখ কোটি ডলার।
♦ জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের তথ্যমতে, মহামারির প্রভাবে ২০২০ সালে বৈশ্বিক প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) হ্রাস পেয়েছে – ৪২ শতাংশ।
♦ উইমেন্স ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডব্লিউআইসিসিআই) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি — ড. হারবিন আরোরা।
♦ যুক্তরাজ্যের অফিস কর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) জানিয়েছে ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক সংকোচন হয়েছে- ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।
♦ বিবিসির সূত্র অনুযায়ী ২০২০ সালে জাপানের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে- ৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন
♦ ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মাথাপিছু জিডিপি প্রায় ১০ শতাংশ হারে সংকুচিত হয়েছে।
♦ নারী, শিশু, বস্তিবাসী, অভিবাসী শ্রমিক ও বয়স্ক মানুষেরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
২০২০ সালকে পেছনে ফেলে এসে ২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে বলেই মনে করে জাতিসংঘ। তারা বলছে, এ বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৪ শতাংশ এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। পরের বছর বা ২০২২ সালে তা দাঁড়াবে যথাক্রমে ২ দশমিক ৫ ও ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সিচুয়েশন প্রসপেক্টাস বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সম্ভাবনা শীর্ষক জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস করা হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়া
২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্দি হার দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। জাতিসংঘ বলছে, এটা যথেষ্ট নয়। ২০২২ সালের পূর্বাভাস হচ্ছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাৎ ২০২২ সালের শেষে দক্ষিণ এশিয়া শেষমেষ প্রাক্-মহামারি পর্যায় অতিক্রম করতে পারবে। তবে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকবে বলে জানানো হয়েছে। বিশ্ববাণিজ্যের সঙ্গে অধিকতর সম্পৃক্ততার জন্য বাংলাদেশ এবং পর্যটনের কারণে মালদ্বীপ ও নেপালের প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বেশি হবে।
বৈশ্বিক বিনিয়োগ কমেছে ৪২ শতাংশ
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাড জানাল, মহামারির প্রভাবে ২০২০ সালে বৈশ্বিক প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) ৪২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালে বৈশ্বিক এফডিআই ছিল দেড় লাখ কোটি ডলার। ২০২০ সালে তা ৮৫ হাজার কোটি ডলারে নেমে এসছে। নব্বইয়ের দশকের পর এই প্রথম বৈশ্বিক এফডিআই এতটা হ্রাস পেল।
নতুন স্টাইলে ভারতের অর্থমন্ত্রীর বাজেট পেশ
ভারতে প্রথমবারের মতো ‘পেপারলেস বাজেট’ পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। আগেই তিনি বলেছিলেন, এমন বাজেট আগে কখনো হয়নি। আর সেই কথামতো ট্যাবলেট কম্পিউটার হাতে নতুন অর্থবছরের বাজেট পড়েছেন অর্থমন্ত্রী। গত ১ জানুয়ারি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হয় ভারতে।