আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি

কালানুক্রমিক ঘটনাবলি

০১.১০.২০২০

♦  গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

♦ কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল আহমেদ আল সাবাহর মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালিত।

♦ বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে  আলেকজান্ডার ডি ক্রো এর দায়িত্ব গ্রহণ।

০২. ১০.২০২০

♦ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে পদত্যাগ করেন দেশটির পর্যটন মন্ত্রী আসাফ জমির।

♦ ভোট জালিয়াতির অভিযোগে বেলারুশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নির্বাচন কমিশনের প্রধানসহ ৪০ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।  

♦  নিউজিল্যান্ডে জাতীয় নির্বাচনে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু।

০৩.১০.২০২০

♦ দক্ষিণ সুদানের রাজধানী জুবায় সুদান সরকারের সাথে সশস্ত্র তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চূড়ান্ত সমঝোতা চুক্তি সাক্ষরিত।

০৪.১০.২০২০

♦ কিরগিজস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত।

♦ করোনা মহামারির কারণে প্রায় সাত মাস বন্ধ থাকার পর প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে পবিত্র ওমরাহ পালন শুরু।

০৫.১০.২০২০

♦ NATO’র মিত্র তুরস্কের কাছে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করে কানাডা।

♦ ইতালির মন্ত্রিসভায় বহুল আলোচিত কঠোর অভিবাসন আইন শিথিল সংক্রান্ত সংশোধনী পাস।

♦ ‘নোবেল পুরস্কার ২০২০’ বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু।

♦ দু’দিনব্যাপী সার্ক আরবিট্রেশন কাউন্সিলের ১১তম গভর্নিং বোর্ড মিটিং পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত।

০৬.১০.২০২০  

♦  দুর্নীতি ও অর্থপাচার মামলায় মালদ্বীপের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আদিবকে ২০ বছরের জেল এবং ১,২৯,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করে দেশটির উচ্চ আদালত।

♦ কিরগিজস্তানে সহিংস বিক্ষোভের পর নির্বাচনী ফল বাতিল করে দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ।

♦ জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয় Quadrilateral Security Dialogue (QUAD)- এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন।

০৭.১০.২০২০

♦ মিডনাইট সার্ভাইভাল ডেডলাইন ফর দ্য ক্লাইমেট শীর্ষক ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের’ (সিভিএফ) এক ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ প্রদান।

♦  নির্বাচন-পরবর্তী ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন কিরগিজস্তানের প্রধানমন্ত্রী কুবাতেক বোরোনোভ।

০৮.১০.২০২০

♦ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভেনিজুয়েলার সরকার সমর্থিত জাতীয় গণপরিষদের প্রেসিডেন্ট মাদুরোর ক্ষমতা বাড়িয়ে একটি আইন পাস করে।

০৯.১০.২০২০

♦ চীনা মালিকানাধীন কোম্পানি Byte Dance’র জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটককে ‘অনৈতিক ও কুরুচিপূর্ণ’ অভিহিত করে অ্যাপটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পাকিস্তান।

♦ ধনী-গরিব নির্বিশেষে COVID-19 ভ্যাকসিনের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে WHO’র উদ্যোগে গঠিত COVAX পরিকল্পনা জোটে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত জানায় চীন।

♦ কিরগিজস্তানের প্রধানমন্ত্রী কুবাতেক বোরোনোভের পদত্যাগ গৃহীত এবং জরুরি অবস্থা জারি।

১০.১০.২০২০

♦ যুক্তরাষ্ট্রের সোফিয়া কেনিনকে হারিয়ে ইগা সিওনতেক’র পোল্যান্ডের ইতিহাসে প্রথম ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়।

১১.১০.২০২০

♦ ‘আমরা সবাই সোচ্চার বিশ্ব হবে সমতার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস পালন।

১২.১০.২০২০

♦ তাজিকিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত। পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইমোমালি রাখমন।

♦ জর্ডানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে  বিশার আল-খাসাওনেহ এর দায়িত্ব গ্রহণ।

১৩.১০.২০২০

♦ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের (UNHRC) ২০২১-২৩ মেয়াদের জন্য ১৫টি দেশকে নতুন সদস্য হিসেবে নির্বাচন করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ।

♦ সিরামিক শিল্ড ও কানেক্টরবিহীন 5G সমর্থিত ৪টি মডেলের আইফোন ১২ উম্মোচন করে অ্যাপল।

১৫.১০.২০২০

♦ ভারতীয় নৌবাহিনীর মালিকানাধীন একটি সাবমেরিনকে মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

১৬.১০. ২০২০

♦ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) ১৯০ তম সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় ইউরোপের দেশ অ্যান্ডোরা।

♦ ‘বিশ্ব ক্ষুধা সূচক ২০২০’ প্রকাশ।

১৭.১০. ২০২০

♦ নিউজিল্যান্ডে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত।

♦ কৃষ্ণসাগরে আরও ৮৫ বিলিয়ন ঘনমিটার প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়ার ঘোষণা দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান।

♦ চীনে নতুন জৈব নিরাপত্তামূলক আইন অনুমোদন করে দেশটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কর্তৃপক্ষ ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটি।

♦ ১২তম BRICS সম্মেলন ২০২০ (ভার্চ্যুয়াল) অনুষ্ঠিত হয়।

♦ নিউজিল্যান্ডে জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন জাসিন্ডা আরডার্ন।

১৮.১০.২০২০

♦ টানা ১৩ বছর পর ইরানের ওপর থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উঠে যায় জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা।

♦ সৌদি আরবের ধর্মবিষয়ক নির্দেশনা প্রদানকারী সিনিয়র স্কলার কাউন্সিল, দেশ পরিচালনা ও নীতিনির্ধারণকারী শুরা কাউন্সিল এবং বিচারকার্য পরিচালনাকারী সুপ্রিমকোর্ট পুনর্গঠন সংক্রান্ত্র রাজকীয় ফরমান জারি করেন বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ।

♦ বলিভিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত।

♦ চতুর্থ আরব দেশ হিসেবে ইসরাইলের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে বাহরাইন।

১৯.১০.২০২০

♦ প্রথমবারের মতো ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবের কাছে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে অবতরণ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের যাত্রীবাহী একটি বিমান।

♦ জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে সুইজারল্যান্ডে জেনেভায় আলোচনা বসে লিবিয়ার বিবাদমান দুই পক্ষ সরকার, গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (GNA) ও লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (LNA)।

♦ সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রের তালিকা থেকে সুদানের নাম বাদ দেয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

♦ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা জোরালো করতে জাপান ও ভিয়েতনামের মধ্যে চুক্তি সাক্ষরিত।

২২.১০.২০২০

♦ জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় লিবিয়ার আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী সমর্থিত ত্রিপোলিভিত্তিক সরকার, গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (GNA) ও খলিফা হাফতারের লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (LNA) স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

♦ জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ICJ-তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার নথিপত্র জমা দেয় গাম্বিয়া।

২৩.১০.২০২০

♦ BREXIT- উত্তর মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে (FTA) সাক্ষর করে যুক্তরাজ্য ও জাপান। চুক্তিটি ১ জানুয়ারি ২০২১ থেকে কার্যকর হবে।

♦ ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সুদান সম্মত বলে ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরাইল ও সুদানের অন্তর্বর্তী সরকারও এ সংক্রান্ত যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে।

২৪.১০.২০২০

♦ জাতিসংঘের ৭৫ বছর পূর্তি।

♦  মিসরে পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রথম পর্যায়ের ভোট গ্রহণ শুরু।

 

আলোচিত আন্তর্জাতিক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রসঙ্গঃ

♦ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টার অভিযোগে ২২ অক্টোবর ২০২০ ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস করপস (IRGC) ও IRGC-কুদস ফোর্সসহ পাঁচ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন প্রশাসন।

♦ আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা মোতায়েনের ১৯তম বার্ষিকীতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

♦ ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্টের নতুন বিচারপতি পদে ফেডারেল আপিল কোর্টের রক্ষণশীল বিচারক অ্যামি কোনি ব্যারেটকে মনোনয়ন দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্যারেটের নিয়োগ মার্কিন সিনেটের ভোটে নিশ্চিত হলে তিনিই হবেন সুপ্রিমকোর্টের তৃতীয় নারী বিচারপতি।

♦ করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সের তৈরি ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ রেমডিসিভির ব্যবহারের পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। করোনার চিকিৎসায় এটিই দেশটিতে অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রথম ও একমাত্র ওষুধ। ২২ অক্টোবর, ২০২০ যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (FDA) হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় রেমডিসিভির ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। এটি শিরায় প্রয়োগ করা হয়। করোনায় আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিকিৎসাতেও এ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।

ইলেকটোরাল কলেজঃ

কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট ও সিনেটরদের জন্য একটি করে ইলেকটোরাল কলেজ বরাদ্দ। কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট ও সিনেটরের সংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা নির্ধারিত আছে। যে রাজ্যে যে প্রার্থী সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পাবেন, ঐ রাজ্যের সব ইলেকটারাল কলেজ ভোট তার।

মহাকাশচারীর ভোটঃ

২২ অক্টোবর ২০২০ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) থেকে ভোট দেন মার্কিন মহাকাশচারী কেট রুবিনস। যখন ভোট দিলেন, তখন তিনি অবস্থান করছিলেন ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৫৩ মাইল ওপরে।

বিতর্কে জয়ী বাইডেনঃ

৫৯তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেনের মধ্যে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ও ২২ অক্টোবর ২০২০ দুই দফায় অনুষ্ঠিত হয় প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক। দুই দফা বিতর্কে দর্শকদের বিচারে জয়ী হন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

 মিয়ানমার প্রসঙ্গঃ

♦ ৮ নভেম্বর ২০২০ মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হবে সাধারণ নির্বাচন। দেশটির পাঁচ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ভোটার সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ। পার্লামেন্টের মোট আসন ৬৬৪টি, যার মধ্যে সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত ১৬৬টি। সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্টে যে-কোনো দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ৬৬৪ আসনের মধ্যে কমপক্ষে ৩৩৩টি আসন পেতে হয়।

♦ ১৫ অক্টোবর ২০২০ ভারত মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করে ভারতীয় নৌবাহিনীর মালিকানাধীন INS Sindhuvir নামে। ৩,০০০ টন ওজনের কিলো ক্লাস সাবমেরিন। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো সাবমেরিনের মালিক হয়। মিয়ানমার নৌবাহিনী। নতুন মালিকানায় সাবমেরিনটি নামকরণ করা হয় ইউএমএস মিন ইয়ে থেইন খা থু।।

♦ জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (ICJ) ১১ নভেম্বর ২০১৯ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। প্রাথমিক শুনানির পর ২৩ জানুয়ারি ২০২০ এ আদালত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় জরুরিভিত্তিতে চার দফা অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারকে নির্দেশ দেন। এ সময় আদালত রোহিঙ্গা গণহত্যা-সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দেয়ার জন্য গাম্বিয়াকে নির্দেশ দেন, যাতে মামলাটি অগ্রসর হতে পারে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ২২ অক্টোবর ২০২০ ICJ-তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার ৫০০ পৃষ্ঠার নথিপত্র জমা দেয় গাম্বিয়া। পাশাপাশি আরো ৫,০০০ পৃষ্ঠার সহায়ক নথিপত্রও জমা দেয়া হয়।

 চীন প্রসঙ্গঃ

♦ ৬ অক্টোবর ২০২০ জাতিসংঘে মানবাধিকার সংক্রান্ত এক বৈঠক থেকে চীনের উইঘুর, হংকং ও তিব্বত নীতির নিন্দা জানায় ৩৯টি দেশ। জার্মানির নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও কানাডাসহ দেশগুলো এ নিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। এর আগে ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের উদ্যোগে এমন একটি খসড়ায় স্বাক্ষর করে ২৩টি দেশ।

♦ সম্প্রতি চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের (NHC) এক পরিসংখ্যানে জানানো হয় যে, বর্তমানে চীনাদের গড় আয়ু ৭৭.৩ বছর।

♦ সম্প্রতি শব্দের গতির চেয়ে পাঁচ গুণেরও বেশি গতিসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপক W-14 নামের বোমারু বিমান তথা হাইপারসনিক বিমানের সফল পরীক্ষা চালায় চীন। এটি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে সক্ষম। হাইপারসনিক গতি বলতে ঘণ্টায় ৩,৮৪০-৭,৬৮০ মাইল পর্যন্ত বোঝায়।

♦ ১৭ অক্টোবর ২০২০ চীনের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটি একটি নতুন জৈব নিরাপত্তামূলক আইনের অনুমোদন দেয়। ১৫ এপ্রিল ২০২১ থেকে আইনটি কার্যকর হবে।

নাগার্নোকারাবাখ বিরোধ সর্বাত্মক যুদ্ধে আজারবাইজানআর্মেনিয়া

দক্ষিণ ককেশাসের বিতর্কিত অঞ্চল নাগার্নো-কারাবাখ। অঞ্চলটি নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশ আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার বিরোধ অনেক পুরোনো। সম্প্রতি বিরোধপূর্ণ নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে দেশ দুটি।

 নাগার্নোকারাবাখ সংঘাতের ইতিহাস

স্থলবেষ্টিত অঞ্চল নাগার্নো-কারাবাখের আয়তন ৪,৪০০ বর্গকিলোমিটার। কারাবাখ পাহাড়ি পরিসীমার মধ্যে, নিম্ন কারবাখ ও জংজুরের মধ্যে অবস্থিত এবং ক্ষুদ্রতর ককেশাস পর্বতমালার পূর্বাঞ্চলীয় পরিসীমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে এ অঞ্চল। এর বেশিরভাগই পাহাড় ও বনভূমি। নাগার্নো-কারাবাখের পরিবেশ ওক, হর্নিম ও বীচবৃক্ষের ঘন বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে কুরার নিম্নভূমির প্রান্তর থেকে আলাদা হয়েছে। এ অঞ্চলে প্রচুর প্রাকৃতিক ঝরনা এবং দস্তা, কয়লা, সিসা, স্বর্ণ, মার্বেল ও চুনাপাথরের মজুদ রয়েছে। আঙুর-ক্ষেত, বাগান ও রেশম পোকার জন্য তুঁত গাছগুলো উপত্যকায় গজিয়ে উঠেছে। সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে পারস্যের মুসলিম বিজয়ের মাধ্যমে নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চলটি মুসলিম আরব কর্তৃক বিজিত। হয়। পরবর্তীকালে এটি খিলাফাত কর্তৃক অনুমোদিত স্থানীয় গভর্নরদের দ্বারা পরিচালিত হতে থাকে। সোভিয়েত যুগে নাগার্নো-কারাবাখ ছিল স্বায়ত্তশাসিত এলাকা। ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের পর কারাবাখ ট্রান্সককেশীয় গণতান্ত্রিক ফেডারেটিভ রিপাবলিকের অংশে পরিণত হয়। পরের দুই বছর (১৯১৮-১৯২০), কারাবাখসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলজুড়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে একাধিক সংক্ষিপ্ত যুদ্ধ হয়। জুলাই ১৯১৮ নাগোনো- কারাবাখে প্রথম আর্মেনীয়রা একটি জাতীয় কাউন্সিল ও সরকার গঠন করে পরে অটোমান। সেনাবাহিনী কারাবাখে প্রবেশ করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যের পরাজয়ের পরে ব্রিটিশ সেনারা কারাবাখ দখল করে নেয়। ২৮ এপ্রিল, ১৯২০ বলশেভিকরা আজারবাইজান দখল করে নেয়। ১৯২১ সালে আর্মেনিয়া এবং জর্জিয়াও বলশেভিকরা দখল করে নেয়। ২৮ ডিসেম্বর, ১৯২২ আজারবাইজান সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত হয়। একই সাথে আর্মেনিয়া, আজারবাইজান এবং জর্জিয়াকে নিয়ে গঠন করা হয়। Transcaucasian Socialist Federative Soviet Republic (TSFSR)। ৭ জুলাই ১৯২৩ তৎকালীন সোভিয়েত শাসক জোসেফ স্ট্যালিন নাগার্নো-কারাবাখকে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলেপরিণত করে আজারবাইজানের সাথে জুড়ে দিয়ে নাম দেন Nagorno-Karabakh Autonomous Oblast (NKAO)। ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৩ TSFSR বিলুপ্ত করে আজারবাইজান, জর্জিয়া ও আর্মেনিয়াকে তিনটি আলাদা প্রজাতন্ত্রে রূপান্তর করা হয়। মূলত তখন থেকেই আজারবাইজানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী এবং নাগার্নো-কারাবাখ এলাকার খ্রিস্টান আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন আজারবাইজানআর্মেনিয়া সংঘাত

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের শুরুর দিকে অঞ্চলটি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানদের মধ্যে বিরোধের উৎস হিসেবে পুনরায় উত্থিত হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮ আর্মেনীয়রা নাগার্নো-কারাবাখকে আর্মেনিয়া-প্রজাতন্ত্রের সাথে একীভূতকরণের জন্য বিক্ষোভ শুরু করে। ২৯ নভেম্বর, ১৯৮৯ নাগার্নো-কারাবাখে প্রত্যক্ষ শাসনের অবসান ঘটে। ২৬ নভেম্বর, ১৯৯১ NKAO বিলুপ্ত হয় এবং আজারবাইজান নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চলটি প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১০ ডিসেম্বর, ১৯৯১ নাগানো-কারাবাখের আর্মেনীয়রা Republic of Artsakh নামে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের কথা ঘোষণা দেয়। শুরু হয়ে যায় পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ। যুদ্ধের এক পক্ষে থাকে নাগার্নো-কারাবাখ ও আর্মেনিয়া, অন্যদিকে আজারবাইজান। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ৫ মে, ১৯৯৪ দুই পক্ষের মধ্যে Bishkek Protocol নামে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা ১২ মে, ১৯৯৪ কার্যকর হয়। ১৯৯১-৯৪ সালের যুদ্ধে ২০, ০০০ মানুষ প্রাণ হারায়, বাস্তুচ্যুত হয় ১০ লাখের বেশি।

আজারবাইজানআর্মেনিয়া সাম্প্রতিক যুদ্ধ

বিবাদপূর্ণ নাগার্নো-কারাবাখের মালিকানা ঘিরে ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। ১৯৯০ দশকের পর সবচেয়ে বড় এ সংঘাতে উভয়পক্ষের শত শত সেনা সদস্য হতাহত, যুদ্ধ বিমান, ড্রোন, আর্টিলারি যান ও ট্যাঙ্ক বিধ্বস্ত হয়। ২২ অক্টোবর ২০২০ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, এ পর্যন্ত সংঘাতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ মারা গেছে। অন্যদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, নিহতের সংখ্যা এক হাজারের কম।

নাগার্নো-কারাবাখ আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু বর্তমানে তা আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীর নিয়ন্ত্রণে।

আর্মেনিয়ার বেশিরভাগ জনগোষ্ঠী খ্রিষ্টান। অন্যদিকে তেল সমৃদ্ধ আজারবাইজান মুসলিম অধ্যুষিত।

ককেশাস অঞ্চলের এ দুই দেশই ছিল। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ।

নাগার্নো-কারাবাখ সংকট নিরসনে ১৯৯২ সালে গঠিত হয় OSCE মিনস্ক গ্রুপ।

 জম্মু ও কাশ্মীরের দলগুলো জোটবদ্ধঃ

জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের পূর্বের অবস্থান ফিরিয়ে আনতে ১৫ অক্টোবর ২০২০ জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো জোটবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জম্মু ও কাশ্মীরের সক্রিয় প্রভাবশালী প্রায় সব দলের অংশগ্রহণে জোটের নামকরণ করা হয় People’s Alliance for Gupkar Declaration। জোটে অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য দল- জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স (JKNC), পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (PDP), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া মার্ক্সবাদী (CPI-M), আওয়ামী ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিপলস কনফারেন্স ও পিপলস মুভমেন্ট।

নোবেল পুরস্কার ২০২০

অক্টোবর মাসে ঘোষণা করা হয় বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার নোবেলজয়ীদের নাম। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করে ৩১৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

২০২০ সালের ১১ ব্যক্তি (পুরুষ ৭ ও নারী ৪) এবং ১টি সংস্থার নোবেলজয় ও তাদের অবদান নিম্নরুপ-  

 পুরস্কার জয়ী ব্যক্তি সংস্থা

চিকিৎসা → হার্ভে জে অল্টার, মাইকেল হটন, চার্লস এম রাইস।

পদার্থ → রজার পেনরোজ, রেইনহার্ড গেঞ্জেল, আন্দ্রেয়া ঘেজ।

রসায়ন → ইমানুয়েল শারপঁসিয়ে, জেনিফার এ. ডাউডনা।

সাহিত্য → লুইস এলিজাবেথ গ্লাক।

শান্তি → বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচ (WFP)।

অর্থনীতি → পল রবার্ট মিলগ্রোম, রবার্ট বি উইলসন।

চিকিৎসা শাস্ত্র (পুরস্কার ঘোষণা ৫ অক্টোবর ২০২০)

হেপাটাইটিস সি-কে বলা হয় নীরব ঘাতক। বিশ্বে যকৃতের সিরোসিস ও যকৃতের ক্যান্সারের ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার বলে জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২০ লাখ মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত। হেপাটাইটিস সি -এর কার্যকর  কোনো ভ্যাকসিন বা টিকা নেই। এত দিন এই রোগের প্রধান ওষুধ ছিল একধরনের বিশেষ ইনজেকশন, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তবে বর্তমানে মুখে খাওয়ার ওষুধ (ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল) পাওয়া যায়, যা সহজলভ্য ও তুলনামূলক সাশ্রয়ী। এই নতুন ওষধের কল্যাণে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস নিরাময়ের সম্ভাবনা ৯৫ শতাংশের বেশি। হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিস্কার এবং চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য নোবেল পান ৩ জন।

হার্ভে জে অল্টার (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৩৫; নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র)

মাইকেল হটন (জন্ম: ১৯৪৯; যুক্তরাজ্য)

চার্লস এম রাইস (জন্ম: ২৫ আগস্ট ১৯৫২; ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র)

পদার্থবিদ্যা (পুরস্কার ঘোষণা ৬ অক্টোবর ২০২০)

‘কৃষ্ণগহ্বর (Black Hole) গঠনে আপেক্ষিকতা-তত্ত্বের একটি শক্তিশালী পূর্বাভাস’ আবিষ্কার এবং ‘আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রে অদৃশ্য ও ভারী এক ধরনের বস্তু বা Supermassive Compact Object’ আবিষ্কারের জন্য নোবেল পান ৩ জন।

রজার পেনরোজ (জন্ম: ৮ আগস্ট ১৯৩১; কোলচেস্টার, যুক্তরাজ্য)। তিনি বয়োজ্যেষ্ঠ নোবেলজয়ী (৯০ বছর)

রেইনহার্ড গেঞ্জেল (জন্ম: ২৪ মার্চ ১৯৫২; ব্যাড হামবুর্গ ভর ডের হহে, জার্মানি)

আন্দ্রেয়া ঘেজ (জন্ম: ১৬ জুন ১৯৬৫; নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র)

পুরস্কারের অর্ধেক পাবেন রজার পেনরোজ। বাকি অর্ধেক অর্থ সমানভাবে পাবেন রেইনহার্ড গেঞ্জেল ও আন্দ্রেয়া ঘেজ।

পদার্থবিজ্ঞানে চতুর্থ নারী হিসেবে নোবেল জয় করেন আন্দ্রেয়া ঘেজ। অন্য তিনজন-মেরি কুরি (১৯০৩), মারিয়া জিউপার্ট-মায়ের (১৯৬৩) ও ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড (২০১৮)।

রসায়ন (পুরস্কার ঘোষণা ৭ অক্টোবর ২০২০)

ইমানুয়েল শারপঁসিয়ে (জন্ম: ১১ ডিসেম্বর ১৯৬৮; জুভিসি-সুর ওর্গ, ফ্রান্স)। তিনি সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী (৫২ বছর)

জেনিফার এ ডাউডনা (জন্ম: ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪; ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র)

জিন সম্পাদনার সবচেয়ে কার্যকর কৌশল CRISPRCas9 নামের জেনেটিক কাঁচি উদ্ভাবনের জন্য এ ২ জন নোবেল পান।

CRISPR’র পূর্ণরূপ- Clustered Regularly Interspaced Short Palindrome Repeats।

রসায়নে কোনো পুরুষ বাদে শুধু দুইজন নারী প্রথমবারের মতো যৌথভাবে পুরস্কার লাভ করেন।

রসায়নে নোবেলজয়ী আগের পাঁচ নারী-মেরি কুরি (১৯১১), ইরিন জুলিও কুরি (১৯৩৫), ডরোথি ক্রফুট হজকিন (১৯৬৪), অ্যাডা ই. ইয়োনাথ (২০০৯) এবং ফ্রান্সিস এইচ আর্নল্ড (২০১৮)।

সাহিত্য (পুরস্কার ঘোষণা ৮ অক্টোবর ২০২০)

লুইস এলিজাবেথ গ্লাক (জন্ম: ২২ এপ্রিল ১৯৪৩; নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র)

বাবা: ড্যানিয়েল গ্লাক;  মা: বিয়াত্রিচ গ্লাক

সরল ও সৌন্দর্য্যময় সুস্পষ্ট কাব্যিক কণ্ঠস্বরের জন্য আত্মজীবনীমূলক কবি লুইস এলিজাবেথ গ্লাক সাহিত্যে নোবেল পান।

লুইস গ্লাকের কবিতার তিনটি বৈশিষ্ট্যের কথা বলে সুইডিশ একাডেমি। বৈশিষ্ট্য তিনটি-

পারিবারিক জীবন, খেলাচ্ছলে প্রকাশিত বৌদ্ধিক বিভা এবং রচনায় পরিস্ফুট সূক্ষ্ম জ্ঞানের বিচ্ছুরণ।

২০০৩-০৪ সময়কালে লুইস গ্লাক US Poet Laureate সম্মাননা লাভ করেন ।

সাহিত্যে নোবেলজয়ী ১৬তম নারী এব ৩৫তম কবি হলেন লুইস গ্লাক।

১৩টি স্বতন্ত্র কাব্যগ্রন্হ এবং কবিতা বিষয়ে দুটো প্রবন্ধগ্রন্হ। প্রথম কাব্যগ্রন্হ Firstborn; প্রকাশ-১৯৬৮। সর্বাধিক প্রশংসিত কাব্যগ্রন্হ The wild Iris (১৯৯২); এর জন্য ১৯৯৩ সালে লাভ করেন পুলিৎজার পুরস্কার। ২০১৪ সালে প্রকাশিত Faithful and Virtuous Night কাব্য সংকলনের জন্য লাভ করেন ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড।

শান্তি (পুরস্কার ঘোষণা ৯ অক্টোবর ২০২০)

ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়তে আর সংঘাত কবলিত এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট নবম সংস্থা হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে। WFP বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা সংস্থা। সংস্থার তথ্যমতে, এটি ২০১২-১৯ পর্যন্ত ৮৮টি দেশে ৯৭ মিলিয়ন মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেয়। এর সদর দপ্তর ইতালির রাজধানী রোমে অবস্থিত। বিশ্বজুড়ে WFP’র ৮০টিরও বেশি শাখা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডুয়াইট আইসেনহাওয়ার ১৯৬২ সালে জাতিসংঘের অধীনে খাদ্য সহায়তা বিতরণের পরীক্ষামূলক চেষ্টা চালানোর মাধ্যমে WFP’র প্রথম সহায়তা কর্মসূচী পরিচালিত হয় ইরানের ভূমিকম্পকবলিত উত্তরাঞ্চলে। ১৯৬৩ সালে স্কুল মিল প্রকল্প শুরু করে WFP। এরপর ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠান হিসেবে পূর্ণাঙ্গ রূপ পায় সংস্থাটি। ২০ ডিসেম্বর ১৯৬৫ জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থার মর্যাদা লাভ করে WFP।

নোবেলজয়ী জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট সংস্থা ৯টি (১০ বার)-UNHCR (১৯৫৪ ও ১৯৮১), UNICEF (১৯৬৫), যাত্রা শুরু। ILO (১৯৬৯), জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী (১৯৮৮), জাতিসংঘ (২০০১), IAEA (২০০৫) IPCC (২০০৭), OPCW (২০১৩) ও WFP (২০২০)।

অর্থনীতি (পুরস্কার ঘোষণা ১২ অক্টোবর ২০২০)

পল রবার্ট মিলগ্রোম (জন্ম: ২০ এপ্রিল ১৯৪৮; ডেট্রয়েট, যুক্তরাষ্ট্র)

রবার্ট বি. উইলসন (জন্ম: ১৬ মে ১৯৩৭; জেনেভা, যুক্তরাষ্ট্র)

নিলাম তত্ত্ব উন্নয়ন ও নতুন নিলাম তত্ত্ব উদ্ভাবনের জন্য অর্থনীতিতে এ ২ জন নোবেল পান।

নিলাম তত্ত্ব (Auction Theory) হচ্ছে মুক্তবাজারে কাম্য উপযোগিতার জন্য শ্রেষ্ঠ নিলাম ডাককারীর কাছে সম্পদ কিংবা বস্তু বরাদ্দ করার ধারণা। প্রায়োগিক অর্থনীতির একটি শাখা হল নিলাম। নিলাম তত্ত্ব সম্পদ ও বস্তুর প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে বিধান ও হস্তান্তরের পরিকল্পনা প্রদান করে।

বিশ্বের প্রাচীনতম নিলাম ঘর Stockholms Auktionsverk; প্রতিষ্ঠা হয় ১৬৭৪ সালে। ১৯৬০’র দশকের শুরুর দিকে নিলাম তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেন উইলিয়াম ভিকরে। তিনি ১৯৯৬ সালে অর্থনীতি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

নোবেল ইতিবৃত্ত ১৯০১২০২০

♦ ১৯০১ সালে পাঁচটি বিষয়ে পুরস্কার চালু হয়।

♦ পুরস্কার প্রদান ১০ ডিসেম্বর নোবেলের মৃত্যু দিবসে।

♦ পুরস্কারদাতা নোবেল ফাউন্ডেশন

♦ পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ কোটি সুইডিশ ক্রোনার বা প্রায় ১১ লাখ মার্কিন ডলার [১ ডলার = ৮.৮১ ক্রোনার (প্রায়)]

♦ পুরস্কার সংখ্যা ৬০৩, দেয়া হয়নি ৪৯।

♦ পুরস্কার জয়ী ৯৬২ ব্যক্তি ও সংস্থা। 

♦ একাধিকবার জয়ী ৪ ব্যক্তি ও ২ সংস্থা।

♦ সর্বাধিক তিনবার জয়ী ICRC (১৯১৭, ১৯৪৪, ১৯৬৩)।

♦ পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ২৫টি (২৮ বার)।

♦ পুরস্কার প্রাপ্ত নারী ৫৭ জন।

♦ দুইবার পুরস্কারজয়ী একমাত্র নারী মেরি কুরি।

♦ নোবেল মেডেল ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত।

♦ সর্বকনিষ্ঠ জয়ী- মালালা ইউসুফজাঈ/বয়স ১৭ বছর; শান্তি; ২০১৪।

♦ বয়োজ্যেষ্ঠ জয়ী- জন বি গুডেনফ, বয়স ৯৭ বছর; রসায়ন, ২০১৯।

♦ নোবেলজয়ী দম্পতি ৬ ও পিতা-পুত্র ৬।

♦ বিজয়ী দুই ভাই- জেন টিনবারজেন (১৯৬৯) ও নেনিকোলাস টিনবারজেন (১৯৭৩)।

♦ বিজয়ী মা-কন্যা- মেরি কুরি (১৯০৩ ও ১৯১১) এবং ইরিন জুলিও কুরি (১৯৩৫)।

♦ বিজয়ী পিতা-কন্যা- পিয়েরি কুরি (১৯০৩) এবং ইরিন জুলিও কুরি (১৯৩৫)।

♦ পুরস্কার ঘোষণাকালীন কারারুদ্ধ ছিলেন ৩ জন- কার্ল ভন অসিয়েতস্কি (১৯৩৫), অং সান সুচি (১৯৯১) ও লিউ জিয়াওবো (২০১০)।

♦ প্রত্যাখ্যানকারী ২ জন- জ্যঁ পল সার্ত্রে (১৯৬৪) ও লি ডাক থো (১৯৭৩) ।

♦ মরণোত্তর পুরস্কার জয়ী ২ জন- এরিখ কালফেল্ট (১৯৩১) ও দ্যাগ হ্যামারশোল্ড (১৯৬১)।

♦ একমাত্র পুরস্কারজয়ী বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক (২০০৬)।

♦ পুরস্কারজয়ী মুসলিম ব্যক্তিত্ব ১২ জন।

পুরস্কার ঘোষণাকারী সংস্থা

চিকিৎসাশাস্ত্র- ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট

পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও অর্থনীতি- রয়েল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস

শান্তি- নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি

সাহিত্য- সুইডিশ একাডেমি

পরিবেশের ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার       

পরিবেশের ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কারের মতো একটি পুরস্কার প্রবর্তনের ঘোষণা দেন ব্রিটেনের প্রিন্স উইলিয়াম। তিনি এজন্য ৬৫ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৫১ কোটি ৪৬ লাখের বেশি টাকা অনুদান দেয়ার কথা জানান। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিশ্ববাসীকে উৎসাহ দিতেই এ পুরস্কার দেয়া হবে। পরিবেশের ক্ষেত্রে এটা হবে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার। ২০২১ সাল থেকে Earthshort Prize  নামের এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হবে। এ পুরস্কার দেয়া হবে পাঁচটি লক্ষ্য নিয়ে- পরিবেশের সুরক্ষা, নির্মল বাতাস, সাগরের পরিচ্ছন্নতা, বর্জ্যমুক্ত বিশ্ব এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা। প্রতি বছর পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য পাঁচ জনকে এ পুরস্কার দেয়া হবে।

চিকিৎসাশিক্ষা

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে চিকিৎসক কিংবা বিজ্ঞানীদের চেয়ে রাজনীতিবিদদের ভূমিকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মহামারি মোকাবিলা করে পুরো বিশ্বকে এ শিক্ষা দেয়ায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো, তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট গুরুবাঙ্গুলি বারদিমুহামেদু-কে চিকিৎসাশিক্ষায় দেয়া হয় ইগ নোবেল।

জার্মান ঐতিহ্যবাহী শান্তি পুরস্কার

১৯৫০ সালে থেকে বিশ্বের বিখ্যাত ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় জার্মান বই প্রকাশক ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে দেয়া হয়ে থাকে ঐতিহ্যবাহী শান্তি পুরস্কার। ২০২০ সালে এ পুরস্কার লাভ করেন ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। ১৮ অক্টোবর ২০২০ ফ্রাঙ্কফুর্টের বিখ্যাত পাউল গির্জায় বিশিষ্ট অতিথিদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পুরস্কারের জন্য অমর্ত্য সেনের নাম ঘোষণা করা হয়। বিচারকরা জানান, গত কয়েক দশক ধরে বিশ্বে ন্যায়বিচারের প্রশ্ন তুলে তা মোকাবিলার জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে চলেছেন অমর্ত্য সেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে একনাগাড়ে লড়ছেন এ অর্থনীতিবিদ। তার কাজ কখনও প্রাসঙ্গিকতা হারাতে পারে না।

বাস্তবায়ন হবে পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি

২৪ অক্টোবর ২০২০ হন্ডুরাস ৫০তম দেশ হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসমর্থন করে। এর মধ্য দিয়ে ৯০ দিন পরে ২২ জানুয়ারি ২০২১ ঐতিহাসিক এ চুক্তির শর্তাবলি কার্যকর হবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন ও রাশিয়াসহ পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলো এখনো ও চুক্তিতে সাক্ষর করেনি। পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার, উন্নয়ন, তৈরি, পরীক্ষা, মজুতকরণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ  করা হয়েছে। জুলাই ২০১৭ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয় এ চুক্তি। ১২২টি দেশ এ চুক্তিকে সমর্থন করেছে। আর এখন পর্যন্ত সাক্ষর করেছে ৮৪টি দেশ। যদিও এ দেশগুলোর সব কটি চুক্তিটি অনুমোদন করেনি।

মহাসাগরে লা নিনাঃ

২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া সংস্থা (BOM) এবং যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া সংস্থা (NOAA) আলাদাভাবে লা নিনার ঘোষণা দেয়। স্প্যানিস শব্দ ‘লা নিনা’ অর্থ হচ্ছে ‘ছোট্ট বালিকা’। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেন সার্ভিসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, লা নিনাকে কখনো কখনো ‘এল ভিজো’ (পুরাতন); ‘এন্টি এল নিনো’ (উষ্ণতার বিপরীত) বা ‘কোল্ড ইভেন্ট’ (শীতল পর্ব) হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের আবহাওয়ার আরেক পরিস্থিতির নাম ‘এল নিনো’। এর অর্থ হচ্ছে ‘ছোট্ট বালক’। প্রশান্ত মহাসাগরের ৩.৪ ডিগ্রি এলাকার পানির ৩০ বছরের গড় তাপমাত্রায় চেয়ে ০.৫ ডিগ্রি বেশি হলে এল নিনো শুরু হয়। এল নিনো বছরে পৃথিবীতে উষ্ণতা বা খরা বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

 চাঁদে প্রথম নারী

চাঁদে প্রথম পদার্পণের ৫৫ বছর পর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে আবারও চাঁদের মাটিতে হাঁটবেন দু’জন মানুষ- একজন নারী এবং একজন পুরুষ মহাকাশচারী। এ প্রকল্পের কয়েকটি ধাপ রয়েছে। প্রথমে নাসা মানবহীন একটি যান পাঠাবে ২০২১ সালে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে যাবেন মহাকাশচারীরা। এ চন্দ্রাভিযানের নাম দেয়া হয়েছে আর্টেমিস। এর মাধ্যমে প্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে গিয়ে পরীক্ষার কাজ চালানো হবে।

 WTOর নারী মহাপরিচালকঃ

৮ অক্টোবর ২০২০ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) পক্ষ থেকে পরবর্তী মহাপরিচালকের জন্য দুইজন নারীকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মনোনীত দুই প্রার্থী হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রী ইয়ো মিয়াং হি ও নাইজেরিয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী এনগোজি ওয়েইলা। নভেম্বর ২০২০ ঘোষণা করা হবে মহাপরিচালক পদে চূড়ান্ত বিজয়ীর নাম। দুই প্রার্থীর মধ্যে যেই নির্বাচিত হন না কেন, সেক্ষেত্রে WTO’র ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হবেন একজন নারী।

আমিরাতের তৃতীয় উপগ্রহ উৎক্ষেপণ

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ রাশিয়ার সুয়ুজ কসমোড্রোম উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের তৃতীয় উপগ্রহ ‘মেজনস্যাট’ (MeznSat)। আমিরাতের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের তৈরি উপগ্রহটি তিন ইউনিটের কিউব স্যাটবিশিষ্ট। এর আগে ২০১৭ সালে এক ইউনিটের কিউবস্যাট নায়েফ-১ (Nayif-1) ও ২০১৮ সালে মাইস্যাট-১ (MySat-1) উৎক্ষেপণ করা হয়।

মধ্যপ্রাচ্যের সর্ববৃহৎ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ

‘তাবুক বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ’ নামে পরিচিত সৌদি আরবে নির্মিত মধ্যপ্রাচ্যের সর্ববৃহৎ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ, যা আধুনিক স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন। গোটা মধ্যপ্রাচ্যে এটিই খুঁটিবিহীন গম্বুজবিশিষ্ট সর্ববৃহৎ মসজিদ। সম্প্রতি তাবুক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ মসজিদ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। জুমার নামায আদায়ের জন্য মসজিদটি প্রথম মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ৫,৮৮৭ মিটারের ছাদ পুরোটাই মোজাইক করা। ছাদে এবং অভ্যন্তরীণ দেওয়ালে খোদাইচিত্র ও কাচশিল্পের চোখ ধাঁধানো নকশা। ৮০০ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে মসজিদের অবস্থান। এখানে অন্তত সাড়ে তিন হাজার মুসল্লি একত্রে জামাতে নামায আদায় করতে পারবে। মসজিদের ছাদে ৫০ মিটার সুউচ্চ দুটি মিনার রয়েছে। মেঝেতে ব্যবহার করা হয়েছে উজ্জ্বল গ্রানাইট ও মার্বেল পাথর। পুরো মসজিদ কমপ্লেক্সই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।

আগস্টে চীনে জ্বালানি তেল উত্তোলন প্রবৃদ্ধি .%

চীনের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনে প্রবৃদ্ধির দেখা মিলেছে। চীনের নিজস্ব কূপগুলো থেকে চলতি বছরের আগস্টে ১ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৩% বেশি। শুধু আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় নয়, বরং গত জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে পণ্যটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০.৬%। চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের সর্বশেষ মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য শক্তি কর্মসংস্থান সমীক্ষাঃ

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ নবায়নযোগ্য শক্তি খাতের বৈশ্বিক সংস্থা International Renewable Energy (IRENA) ‘নবায়নযোগ্য শক্তি ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। IRENA’র ১৬১টি সদস্য দেশকে এ প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী-

♦ বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার।

♦ সৌরবিদ্যুৎ খাতে কর্মসংষ্থানে শীর্ষ দেশ চীন, দ্বিতীয় জাপান, তৃতীয় যুক্তরাষ্ট্র, চতুর্থ ভারত ও পঞ্চম বাংলাদেশ।

♦ ভেনিজুয়েলা-গায়ানার অঞ্চল বিরোধ নিষ্পত্তিতে কাজ করে আসছে গায়ানা বিষয়ক কমনওয়েলথ মিনিস্ট্রিয়াল গ্রুপ (CMG)। সম্প্রতি CMG’তে প্রথমবারের মতো সভাপতির দায়িত্ব লাভ করে বাংলাদেশ। সভাপতি পদে সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আব্দুল মোমেন।

♦ আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (icddr,b) ৬০ বছরের গৌরবময় ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নির্বাহী পরিচালক পদে নিয়োগ  লাভ করেন ডা. তাহমিদ আহমেদ। icddr,b’র আন্তর্জাতিক বোর্ড অব ট্রাস্টি তাকে পরবর্তী নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। তিনি ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ নির্বাহী পরিচালক পদে যোগ দেবেন। এর আগে এ পদে প্রফেসর জন ডি ক্লেমেন্স ২০১৩ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।  

♦ আন্তর্জাতিক সমুদ্রতল কর্তৃপক্ষের (ISA) ২৬তম অধিবেশনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সমুদ্র বিষয়ক ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশিদ আলম সভাপতি নির্বাচিত হন। ১ অক্টোবর ২০২০ তাকে এ পদে নির্বাচিত করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালেও তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

♦  ‘গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ৫ মে ২০২০ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কার্টুনিস্ট রাইটস নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনালের (CRNI) রবার্ট রাসেল কারেজ ইন কার্টুনিং অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। ৪ অক্টোবর ২০২০ তার এ পুরস্কার পাওয়ার কথা জানায় CRNI।

♦ ৪ অক্টোবর ২০২০ UNICEF’র জাতীয় শুভেচ্ছাদূত হন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। বর্তমানে UNICEF’র জাতীয় শুভেচ্ছা দূতদের মধ্যে আরও রয়েছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, জাদুকর জুয়েল আইচ ও অভিনেত্রী আরিফা পারভীন জামান (মৌসুমী)।

♦ সম্প্রতি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ওষুধ কোম্পানি হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের Good Manufacturing Practices (GMP) অনুমোদন লাভ করে দেশের অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের অনকোলজি ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাসিলিটি (প্ল্যান্ট)। GMP অনুমোদন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্য রাষ্ট্র দ্বারা স্বীকৃত। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে EU’র GMP অনুমোদনকে ‘পাসপোর্ট’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে SKFর অনকোলজি ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাসিলিটি অবস্থিত। এটি ক্যান্সারের চিকিৎসার ইনজেকশন ও মুখে সেবনের ওষুধ উভয় ক্ষেত্রেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের GMP অনুমোদন লাভ করে।

♦ রানি এলিজাবেথের জন্মদিন উপলক্ষে যুক্তরাজ্যের সমাজজীবনে যারা বিশেষ ভূমিকা রাখেন, প্রতিবছর তাদের সম্মান জানানোর রীতি রয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের জন্য ৯ অক্টোবর ২০২০ চার ক্যাটাগরিতে মোট ১৪৯৫ জনের নাম প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এ সম্মান অর্জন করেন।

অফিসার্স অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (OBE)

দবিরুল ইসলাম চৌধুরী

লুৎফুর রহমান

মেম্বার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (MBE)

সৈয়দ আফসার উদ্দিন

সাজ্জাদ মিয়া

অলি খান

ব্রিটিশ এম্পায়ার মেডাল (BEM)

নীলিমা রহমান

♦ ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের সম্মাননা লাভ করেন বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি প্রাণিচিকিৎসা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মডেল লাইভস্টক ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ডা. সালমা সুলতানা। ১৩ অক্টোবর ২০২০ সংস্থাটির ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের নরম্যান বোরলগ অ্যাওয়ার্ড ফর ফিল্ড রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন’ বিজয়ী হিসেবে বাংলাদেশের এ ভেটেরিনারিয়ানের নাম ঘোষণা করা হয়।

বিশ্ব সামরিক শক্তি র‍্যাঙ্কিং ২০২০

Global Fire power (GFP) নামের একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ২০০৬ সাল থেকে World Military Strength Ranking প্রকাশ করে আসছে। বিশ্বের ১৩৮টি দেশের এবারের তালিকা প্রকাশ করা হয় সেপ্টেম্বর ২০২০। ৫৫টি মাপকাঠির ভিত্তিতে এ সামরিক শক্তিমত্তার সূচকে স্কোর দেয়া হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী সামরিক শক্তিতে-

♦ শীর্ষ দেশ : যুক্তরাষ্ট্র; সর্বনিম্ন দেশ: ভুটান।

♦ সার্কভুক্ত দেশের অবস্থান: ৪. ভারত, ১৫. পাকিস্তান, ৪৬. বাংলাদেশ, ৭৮. আফগানিস্তান, ৮২. শ্রীলংকা, ১২২. নেপাল ও ১৩৮. ভুটান

বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২০

১০৭টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করে Concern Worldwide and Welthungerhife যৌথভাবে ১৬ অক্টোবর ২০২০ প্রকাশ করে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক (GHI)। এ সূচক অনুযায়ী-

♦ বিশ্বব্যাপী অপুষ্টিতে ভুগছে ৬৯ কোটি মানুষ।

♦ শিশুর উচ্চতা অনুযায়ী দেহের ওজন ১৪ কোটি ১৪ লাখ শিশু।

♦ প্রচণ্ড অপুষ্টিতে ভুগছে ৪ কোটি ৭০ লাখ শিশু।

♦ ২০২৮ সালে বয়স ৫ বছর হওয়ার আগেই মারা গেছে ৫৩ লাখ শিশু।

♦ ক্ষুধার মাত্রা সবচেয়ে কম ১৭টি দেশে- বেলারুশ, বসনিয়া, অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, ব্রাজিল, চিলি, চীন, কোস্টারিকা, ক্রোয়েশিয়া, কিউবা, এস্তোনিয়া, কুয়েত, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, মন্টেনিগ্রো, রোমানিয়া, তুরস্ক, ইউক্রেন ও উরুগুয়ে।

♦ ক্ষুধার মাত্রা উদ্বেগজনক পর্যায়ে  রয়েছে বিশ্বের তিনটি দেশে- শাদ, পূর্ব তিমুর ও মাদাগাস্কার।

♦ সার্কভুক্ত দেশের অবস্থান: ৬৪. শ্রীলংকা, ৭৩. নেপাল, ৭৫. বাংলাদেশ, ৮৮. পাকিস্তান, ৯৪. ভারত ও ৯৯. আফিগানিস্তান।

অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি চিত্র ২০২০

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা Internal Displacement Monitoring Centre (IDMC) ‘অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি ২০২০ : বছরের মধ্যবর্তী চিত্র’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রতিবেদন অনুযায়ী।

♦ নিজ দেশের ভেতরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুতে শীর্ষ দেশ ভারত (২৬, ৭০, ০০০)।

♦ বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় (২৫,২০,০০০ জন)।

♦ সংঘাত ও সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুতে শীর্ষ দেশ : সিরিয়া (১৪,৭৪,০০০ জন)।

CRED UNDRR’ প্রতিবেদন

বেলজিয়ামভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অন দ্য এপিডেমিওলজি অব ডিজাস্টারস (CRED)’ এবং জাতিসংঘের  প্রতিষ্ঠান ‘ইউএন অফিস ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন (UNDRR) ১২ অক্টোবর, ২০২০ ‘দ্য হিউম্যান কস্ট অব ডিজাস্টার; অ্যান ওভারভিউ অব লাস্ট টোয়েনটি ইয়ারস ২০০০-২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী-

♦ সবচেয়ে বেশি দুর্যোগ –আক্রান্ত দেশ : চীন।

বাংলাদেশের অবস্থান নবম।

♦ গত ২০ বছরে বিশ্ব ব্যাপী বড় ধরনের দুর্যোগের ঘটনা ঘটেছে ৭,৩৪৮টি। বড় ধরনের দুর্যোগের মধ্যে ছিল। খরা, বন্যা ভূমিকম্প, সুনামি, দাবানল ও অতিরিক্ত তাপমাত্রা।

♦ গত ২০ বছরে দুর্যোগে ১২ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দুর্যোগের শিকার হন ৪২০ কোটি মানুষ আর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয় ২,৯৭,০০০ কোটি ডলারের।

বিশ্ব বায়ু পরিস্থিত ২০২০

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের Health Effects Institute (HEI), Institute for Health Metrics and evalution (IHME) এবং Global Burden of Disease (GBD) প্রকল্প যৌথভাবে ‘বিশ্ব বায়ু পরিস্থিতি ২০২০’ নামক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী-

♦ ২০১৯ সাল বাংলাদেশে বায়ুদূষণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ৭৪,০০০ জন। আর বিশ্বজুড়ে মারা যায় ৬৭ লাখ মানুষ।

♦ শ্বাসের মাধ্যমে দূষিত বাতাস গ্রহণ করছে বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন।

♦ বাতাসে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম ২.৫) বা অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মান অনুযায়ী, প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ১০ মাইক্রোগ্রাম পিএম ২.৫ থাকলে তাকে সহনীয় বলা যেতে পারে। সেখানে বাংলাদেশে প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫-এ আছে ৬৩.৪ মাইক্রোগ্রাম।

♦ বাতাসে – এর গতি পরিমাণের ভিত্তিতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ ভারত; বাংলাদেশে অবস্থান নবম।

♦ ওজোনস্তর উন্মুক্ত থাকা বিশ্বের শীর্ষ দেশ কাতার; বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ।

জ্বালানি খাতের উন্নয়ন

৮ অক্টোবর ২০২০ ওয়াল্ড এনার্জি কাউন্সি World Energy Trilemma Index প্রকাশ করে। মোট ১৩৩টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ সূচক প্রকাশ করে। সূচকে স্থান পায় ১২৮টি দেশ। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য না পাওয়ায় তালিকা থেকে বাদ পড়েছে পাঁচটি দেশ।

♦ জ্বালানি খাতের সামগ্রিক সক্ষমতায় শীর্ষ দেশ : সুইজারল্যান্ড।

♦ জ্বালানি খাতের সামগ্রিক সক্ষমতায় সর্বনিম্ন দেশ : নাইজার।

জ্বালানি খাতে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া শীর্ষ ১০ দেশের বৈশ্বিক অবস্থান

অবস্থান

দেশ

বৃদ্ধি (%)

৯১

কম্বোডিয়া

৭৭

৮৯

মিয়ানমার

৫০

৮৯

কেনিয়া

৪১

৯৪

বাংলাদেশ

৩৮

৭৫

হন্ডুরাস

৩৬

৮৮

ঘানা

৩৬

৮২

নিকারাগুয়া

৩৪

১০১

ইথিওপিয়া

৩৩

৮৩

তাজিকিস্তান

৩০

৮৭

মঙ্গোলিয়া

২৮

করোনা পরীক্ষার ফলাফল ৩০ মিনিটে

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার রয়েছে এমন ১৩৩ টি দেশে করোনাভাইরাস এর নমুনা পরীক্ষার নতুন এক পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO। এ পরীক্ষা পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটে ফল পাওয়া যাবে বলে মনে করেছে সংস্থাটি। পরীক্ষায় সর্বোচ্চ পাঁচ ডলার অর্থাৎ ৫০০ টাকার নিচে খরচ পড়বে। ছয় মাসে ১২০ মিলিয়ন পরীক্ষা হবে এসব দেশে এমন চুক্তি হয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠান সাথে। WHO এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে আখ্যা দেয়।

WHO’র তথ্য মতে, এটি এক ধরনের অ্যান্টিজেন র‌্যাফিড টেস্ট। এ পরীক্ষাতেও নাক বা গলা থেকে সোয়াব নমুনা সংগ্রহ করে দেখা হয়, সেখানে ভাইরাস এর অস্তিত্ব আছে কি-না।

অ্যান্টিজেন হচ্ছে ভাইরাসের প্রোটিন, যা শরীরের ভেতর প্রবেশ করে কোষের প্রোটিন তৈরির পদ্ধতি ব্যবহার করে নিজের প্রতিলিপি তৈরি করতে শুরু করে। শরীরের ভেতর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইটস প্রবেশ করলেই শরীর সেটাকে অ্যান্টিজেন হিসেবে গণ্য করে।

সমস্যাযুক্তহার্ড ইমিউনিটি ব্যবস্থা

কোনো একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে নির্দিষ্ট অনুপাতে ভ্যাকসিন দেয়া হলে বা ঐ জনগোষ্ঠীতে দ্রুত ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে হার্ড ইমিউনিটির সৃষ্টি হয় বলে ধরে নেয়া হয়। ১২ অক্টোবর, ২০২০ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসেস কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধে হার্ড ইমিউনিটির চিন্তাকে ‘বৈজ্ঞানিকভাবে ও নৈতিকভাবে সমস্যাযুক্ত’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন। তিনি বলেন ‘মানুষকে ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত করার মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করা হয়। একে ছড়িয়ে দিয়ে নয়। মহামারি প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় এটা কোনো কৌশল হিসেবে কখনও ব্যবহার করা হয়নি।

করোনার চিকিৎসায় আইভারমেকটিন

প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসায় ‘আইভারমেকটিন’ ঔষধটি ব্যবহারে বিশ্বে প্রথম পরামর্শ দেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মাসুদুল হাসান। তার পরামর্শ অনুযায়ী, এ ওষুধ প্রয়োগ করে করোনায় আক্রান্ত অনেক রোগী সুস্থ হয়েছেন।

করোনার চিকিৎসারয় খুদে বিজ্ঞানীর পুরস্কার জয়

করোনা চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করে পুরস্কার লাভ করেন ১৪ বছর বয়সী আনিকা শেব্রোলু নামের ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মার্কিন খুদে বিজ্ঞানী পুরস্কার হিসেবে তাকে দেয়া হবে ২৫ হাজার মার্কিন ডলার। আনিকা এমন একটি অনুর উন্নয়ন ঘটিয়েছে, যা SARS-CoV-2 -এর নির্দিষ্ট প্রোটিনের ওপর কাজ করবে এবং এতে ভাইরাসটির সক্ষমতা বিনষ্ট করে দেবে।

WHO’ তালিকায় গ্লোবের টিকা

বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের আবিস্কৃত তিনটি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনকে ১৫ অক্টোবর ২০২০  তালিকাভুক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। টিকাগুলোর নাম – DNA plasmid vaccine, Adenovirus —5Vector এবং D614G variant LNP-encapsulated mRNA। বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক-ই বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যাদের সর্বোচ্চ তিনটি ভ্যাকসিনের নাম WHO’র ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেটের তালিকাতে রয়েছে।

বর্তমানে সারা বিশ্বে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে এবং এ সংক্রমণের D614G variant শতভাগ দায়ী বলে সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হয়। বাংলাদেশ শিল্প ও বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদও (BCSIR) দেশে সংক্রমণের জন্য D614G vsriant স্থায়ী বলে নিশ্চিত করে। গ্লোব বয়োটেকের নিজস্ব পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত BANCOVID ভ্যাকসিনটি D614G variant-এর বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রথম এবং একমাত্র আবিস্কৃত টিকা, যা প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়।

ভ্যাকসিন আপডেট

♦ WHO’র ওয়েবসাইট অনুসারে ১৯ অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ১৯৮ ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪টি রয়েছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এবং প্রি-ক্লিনিকাল ট্রায়ালে রয়েছে ১৫৪টি টিকা।

♦ শিশুদের ওপর প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন পরীক্ষার অনুমোদন পায় মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার। পরীক্ষামূলক এ টিকা ১২ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের ওপর প্রয়োগ করে এর কার্যকারিতা দেখা হবে।

♦ ১৩ অক্টোবর ২০২০ বিশ্ব ব্যাংক ভ্যাকসিনের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ১২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অন্তত ১ মিলিয়ন মানুষ যাতে টিকা পায়, সে লক্ষ্যেই অর্থ সহায়তা দেয়া হবে। করোনা মহামারি মোকাবিলায় জুন ২০২১ নাগাদ এ অর্থ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেয়া হবে।

♦ বাংলাদেশি-আমেরিকান চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডঃ রায়ান সাদির অক্লান্ত পরিশ্রমে উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতির জন্য ১৪ অক্টোবর ২০২০ যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA)-এর কাছে আবেদন করে নিউজার্সির TevogenBio নামক একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান।

♦ করোনাভাইরাস এর দ্বিতীয় আরেকটি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়া। ১৪ অক্টোবর ২০২০ নতুন এ ভ্যাকসিনের ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দেশটির সাইবেরিয়া অঞ্চল এর ‘ভেক্টর ইনস্টিটিউট’ এর বিজ্ঞানীরা ইপি ব্যাক করোনা নামের ভ্যাকসিন তৈরি করেন।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম দুই ধাপের ফলাফল ৫ অক্টোবর ২০২০ মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত হয় ফলাফল অনুযায়ী, আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন শরীরে করোনাভাইরাস এর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম, যা দীর্ঘসময় সুরক্ষা দিতে পারে। সে সাথে এটি নিরাপদ বলেও প্রমাণিত হয়। করোনা টিকার মূল্য নির্ধারণ করেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। তাদের প্রতি ১০ ডোজ ভ্যাকসিনের মূল্য ধরা হয় ৩ ডলার বা প্রায় ২৫০ টাকা।

COVAX পরিকল্পনায় চীনের যোগদান

সমতার ভিত্তিতে করোনা ভ্যাকসিন সবার দ্বারে পৌঁছে দেয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) গৃহীত বৈশ্বিক উদ্যোগ হলো COVAX পরিকল্পনা। বৈশ্বিক এ উদ্যোগের সাথে রয়েছে Coalition for Epidemic Preparedness Innovations (CEPI) ও দাতব্য সংস্থা Global Alliance for Vaccine and Immunization (GAVI)। এর লক্ষ্য হলো কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন মজুদ করে না রেখে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সর্বোচ্চ ঝুঁকির দেশগুলোতে তা বণ্টন করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে উৎসাহিত করা। ৯ অক্টোবর, ২০২০ চীন COVAX  পরিকল্পনায় যোগ দেয়ার কথা জানায়। এখন পর্যন্ত এ উদ্যোগকে সমর্থন জানানোর সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ চীন।

WHO’র প্রধান জানান, ১৯ অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত বিশ্বের ১৮৪টি দেশ ও অর্থনৈতিক জোট COVAX পরিকল্পনায় যোগ দেয়।

Leave a Reply