আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি

কালানুক্রমিক ঘটনাবলি

০১.০৬.২০২৩

♦ দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে দু’দিনব্যাপী BRICS-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু।

♦ নেপাল থেকে ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ যাওয়ার বিষয়ে নেপাল ও ভারতের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর।

০২.০৬.২০২৩

♦ ভারতের কলকাতা থেকে চেন্নাইগামী ট্রেন করমণ্ডল এক্সপ্রেস ওডিশায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় দুই শতাধিক নিহত হয়।

♦ বিশ্বব্যাংকের ১৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন অজয় বাঙ্গা।

♦ অভিষেকের পর ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস প্রথম কোনো দেশ হিসেবে রোমানিয়ায় সফর করেন।

♦ সিঙ্গাপুরে তিন দিনের প্রতিরক্ষা বিষয়ক ‘সাংগ্রি-লা-ডায়ালগ’ শুরু।

০৩.০৬.২০২৩।

♦ তৃতীয় মেয়াদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান।

০৪.০৬.২০২৩

♦ ভারত সফরে যান মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।

০৬.০৬.২০২৩

♦ সৌদি আরবে পুনরায় ইরানের দূতাবাস চালু।

♦ ৩ দিনের সফরে সৌদি আরবে যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

♦ এক শতাব্দীর বেশি সময় পর ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রথম কোনো সদস্য হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দেন প্রিন্স হ্যারি।

০৮.০৬.২০২৩

♦ গোপনীয় সরকারি নথি নিজের কাছে রেখে দেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করা হয়।

০৯ .০৬,২০২৩ ।

♦ যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দেশটির কনজারভেটিভ দলের এমপি বরিস জনসন পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন।

১১.০৬.২০২৩

♦ মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাস চীনের বেইজিংয়ে দূতাবাস উদ্বোধন করে ।

♦ সৌদি আরবের রিয়াদে দু’দিনব্যাপী দশম আরব-চীন সম্মেলন শুরু।

১২.০৬.২০২৩

♦ ইউক্রেনে মস্কোর পক্ষে লড়াইরত ভাড়াটে বাহিনীগুলোকে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে চেচেন বাহিনী ও রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত।

♦ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো ইউরোপে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় ‘বিমান মহড়া’ শুরু করে।

♦ নিউইয়র্ক সিটির প্রথম নারী পুলিশ কমিশনার কিচান্ট সিওয়েল পদত্যাগ করেন।

১৩.০৬.২০২৩

♦ চীনে পঞ্চমবারের মতো সরকারি সফরে যান ফিলিস্তিনি নেতা মাহমুদ আব্বাস।

১৪.০৬.২০২৩

♦ সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফ্রান্স সফরে যান।

১৫.০৬.২০২৩।

♦ ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ ভারত ও পাকিস্তানে আঘাত হানে।

♦ মার্কিন ফেডারেল বিচারক হিসেবে মনোনীত হন প্রথম বাংলাদেশি নুসরাত জাহান চৌধুরী।

♦ চীন একটি রকেট ব্যবহার করে এক মিশনে ৪১টি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায় ।

১৬.০৬.২০২৩

♦ জাপানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ডায়েটে যৌন অপরাধ আইন সংস্কারের বিল অনুমোদন ।

♦ মালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দেশ থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান ।

১৭.০৬.২০২৩

♦ সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফ্য়সাল বিন ফারহান ইরান সফরে যান ।

১৮.০৬,২০২৩

♦ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দু’দিনের সফরে চীনে যান।

♦ ভ্রমণ, ব্যবসা, অস্থায়ী কর্মীসহ সুনির্দিষ্ট কিছু অ-অভিবাসী ভিসা (NIV) আবেদনের ফি বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র।

১৯.০৬.২০২৩

♦ ৬ বছর পর কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত একে-অপরের ভূখণ্ডে আবারও দূতাবাস চালুর ঘোষণা দেয় ।

২১.০৬.২০২৩

♦ ভারতের বেঙ্গালুরুতে ১৪তম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু।

২৫.০৬.২০২৩

♦ গ্রিসেরআইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত।

আলোচিত বিশ্ব

IOMর প্রথম নারী মহাপরিচালক

১৫ মে, ২০২৩ আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (IMO) প্রথম নারী মহাপরিচালক নির্বাচিত হন অ্যামি ই. পোপ। ১ অক্টোবর ২০২৩ তিনি বর্তমান মহাপরিচালক পর্তুগালের আন্তোনিও ভিটোরিনোওর স্থলাভিষিক্ত হবেন। আন্তোনিও ভিটোরিনোও ১ অক্টোবর ২০১৮ দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

সম্মেলন

New Development Bank

আয়োজন: ৮ম;

 সময়কাল: ৩০-৩১ মে, ২০২৩

স্থান: সাংহাই, চীন।

সাংগ্রি-লা-ডায়ালগ

 আয়োজন: ২-৪ জুন, ২০২৩;

স্থান: সিঙ্গাপুর;

আরব-চীন সম্মেলন

আয়োজন: ১০ম;

সময়কাল: ১১-১২ জুন, ২০২৩;

স্থান: রিয়াদ, সৌদি আরব;

World of Work Summit: Social justice for all.

সময়কাল: ১৪-১৫ জুন, ২০২৩;

স্থান: জেনেভা, সুইজারল্যান্ড;

উদ্যোক্তা: আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) ;

ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরাম

আয়োজন: ২৬তম;

সময়কাল: ১৪-১৭ জুন, ২০২৩;

স্থান: সেন্ট পিটার্সবার্গ, রাশিয়া;

পদক-পুরস্কার

দ্যাগ হ্যামারশোল্ড পদক

শান্তি রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৮ সাল থেকে জাতিসংঘ ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড পদক প্রদান করছে। যা জাতিসংঘের দ্বিতীয় মহাসচিব দ্যাগ হ্যামারশোল্ডের নামে প্রবর্তিত হয়। ২০২২ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় ৩৯ দেশের জীবন উৎসর্গকারী ১০৩ জন শান্তিরক্ষীকে ২৫ মে, ২০২৩ এ পদক দেওয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে এ বছর ৫ জন শান্তিরক্ষী এ পদকে ভূষিত হন। তারা হলেন- সুদানের আবেইতে UNISFA মিশনের সার্জেন্ট মোহাম্মদ মনজুর রহমান; দক্ষিণ সুদানের UNMISS মিশনের ল্যান্স কর্পোরাল কফিল মজুমদার; মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের MINUSCA মিশনের সৈনিক মোহাম্মদ শরিফ হোসেন, সৈনিক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং সৈনিক মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন।

সমুদ্রতলে ৫০০০ প্রজাতির জীব

প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে ৫,৫৭৮ নতুন প্রজাতির জীবের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। Clarion-Clipperton Zone (CCZ) নামে পরিচিত প্রশান্ত মহাসাগরের এ অঞ্চলে এসব প্রজাতির বাস। এসব প্রজাতির মধ্যে বেশির ভাগই আর্থ্রোপোডা পর্বের। বাকিগুলো অ্যানিলিডা ও নেমাটোডা পর্বের কৃমি। এই অঞ্চলে নিকেল, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, জিংক ও কোবাল্টের মতো খনিজ পদার্থের ব্যাপক মজুত রয়েছে।

বিশ্বজুড়ে

সাগরে ভাসমান শহর

প্রায় ২০ কোটি বছর আগের প্যালিওজোয়িক যুগে বিদ্যমান বৃহদাকার মহাদেশ প্যানজিয়ার নামানুসারে বিশাল আকৃতির ভাসমান শহর (জাহাজ) ‘প্যানজিওস’ তৈরি করছে সৌদি আরব। এটি তৈরি করতে প্রায় ৮ বছরের মতো সময় লাগবে। যেখানে খরচ হবে প্রায় ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।  ১,৮০০ ফুট লম্বা ও ২,০০০ ফুট চওড়া এই শহরটিতে ৬০,০০০ লোক বসবাস করবে। কচ্ছপের আকারের এই বিশাল জলযানের চারটি পাখনার প্রত্যেকটিতে থাকবে ১৯ ভিলা ও ৬৪ অ্যাপার্টমেন্ট।

বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন

রাশিয়া ও বেলারুশ সীমান্তে পশ্চিমা হুমকি বেড়ে যাওয়ায় ২৫ মার্চ, ২০২৩ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেন। এর অংশ হিসেবে ২৫ মে, ২০২৩ রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগুর সঙ্গে অস্ত্র মোতায়েনের চুক্তি স্বাক্ষর করেন বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন। ১ জুলাই, ২০২৩ এর মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ১৩ জুন, ২০২৩ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জানান, রুশ অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম বেলারুশে পৌঁছেছে। যুদ্ধক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্য অর্জনে কৌশলগত (ট্যাকটিক্যাল) পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে, একটি পুরো শহর ধ্বংস করে দিতে ব্যবহার করা হয় স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্র। ১৯৫৪ সালে প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্ট এর মতে, ইউরোপে তথা ইতালি, জার্মানি, তুরস্ক, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসে ১০০টি B61 কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন রয়েছে।

হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র

৬ জুন ২০২৩ নিজেদের তৈরি প্রথম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করে ইরান। এ ক্ষেপণাস্ত্রের নাম ফাত্তাহ বা বিজয়ী। ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্রটি নির্ভুলভাবে ১,৪০০ কিলোমিটার বেগে সমস্ত প্রতিরক্ষা ঢাল ভেদ করে আঘাত হানতে সক্ষম। এটি শব্দের গতির চেয়ে অন্তত পাঁচগুণ দ্রুত ও জটিল গতিপথে উড়তে পারে। প্রতিপক্ষের জন্য এটি আটকে দেওয়া কঠিন। ইরান প্রথম ২০২২ সালে হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কথা জানায়। তখন দাবি করা হয়, অস্ত্রটি বায়ুমণ্ডলের ভেতরে ও বাইরে ‘ম্যানুভার’ করতে সক্ষম। উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া হাইপারসনিক মিসাইল প্রযুক্তি উন্মোচন করে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনও এর সফল পরীক্ষা চালাতে পারেনি।

সৌদি আরবে দূতাবাস উন্মুক্ত

২ জানুয়ারি, ২০১৬ সৌদি আরবে প্রখ্যাত শিয়া ধর্মগুরু নিমর আল-নিমরকে ফাঁসি দেওয়ার পর তেহরানের সৌদি দূতাবাস এবং দ্বিতীয় শহর মাশহাদের কনস্যুলেটে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। এরপরই দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। কূটনৈতিক সম্পর্কও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চীনের মধ্যস্থতায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরে ১০ মার্চ, ২০২৩ দেশ দুটি পুনরায় দূতাবাস পুনরায় চালুর ঘোষণা দেয়। ২০২৩ সালের মে মাসে সৌদি আরবে নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে কূটনীতিবিদ আলিরেজা এনায়েতিকে নিয়োগ দেয় ইরান। সৌদি দূতাবাস ও কনস্যুলেটে হামলার দীর্ঘ সাত বছর পর ৬ জুন, ২০২৩ রিয়াদে ইরানের দূতাবাস উন্মুক্ত করা হয়।

লাতিন আমেরিকার অভিন্ন মুদ্রা

৩০ মে, ২০২৩ ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় লাতিন আমেরিকার ১২টি দেশকে নিয়ে এক শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে ব্রাজিল। এ সম্মেলনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা গোটা দক্ষিণ আমেরিকায় বাণিজ্যের জন্য নতুন মুদ্রা চালুর প্রস্তাব দেন। অন্য দেশগুলোও তার প্রস্তাব সমর্থন করেন। লাতিন অঞ্চলের বামপন্থি প্রেসিডেন্টরা ২০০৮ সালে ইউনিয়ন অব সাউথ আমেরিকান নেশনস (UNASUR) নামের আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে কয়েকটি দেশে ডানপন্থি সরকার ক্ষমতায় এলে মতাদর্শিক দ্বন্দ্বের কারণে এর কার্যক্রম বেশি দূর এগোয়নি।

যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ান বাণিজ্য চুক্তি

১ জুন, ২০২৩ তাইওয়ানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র। গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত দ্বীপটি নিয়ে চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০২২ সালের আগস্টে একুশ শতকের বাণিজ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ান আলোচনা শুরু হয়। ১৮ মে, ২০২৩ বাণিজ্য উদ্যোগের প্রথম অংশে উভয়পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছায়। এ অংশের মধ্যে শুল্ক, পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ছোট ব্যবসার উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত।

পার্লামেন্ট থেকে বরিসের পদত্যাগ

পার্টিগেট কেলেঙ্কারির ঘটনায় দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের জেরে ৯ জুন, ২০২৩ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এর আগে ২০২৩ সালের মার্চে বরিস তদন্ত কমিটির কাছে স্বীকার করেন যে, করোনা বিধি উপেক্ষা করে পানাহারের আয়োজন করার বিষয়ে তিনি পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করেন। ২০২১ সালের শেষের দিকে অভিযোগ ওঠে লকডাউনের সময় লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে একাধিকবার পার্টির আয়োজন করেন। পরবর্তীতে এটি পার্টিগেট কেলেঙ্কারি নামে পরিচিতি পায়। এ কেলেঙ্কারির জেরে ৭ জুলাই, ২০২২ তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

জাতিসংঘ সংবাদ

UNGA ‘র সভাপতি: ১ জুন, ২০২৩ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম সভাপতি নির্বাচিত হন ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর কূটনীতিক ডেনিস ফ্রান্সিস। তিনি ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো থেকে নির্বাচিত প্রথম সভাপতি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ডেনিস ফ্রান্সিস এক বছর মেয়াদে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

ECOSOC’ নতুন সদস্য: ECOSOC’র সদস্য ৫৪টি। প্রতি বছর এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ১৮টি সদস্যের মেয়াদ শেষ হয়। ৮ জুন ২০২৩ নতুন নির্বাচিত দেশগুলো ফ্রান্স, জার্মানি, হাইতি, জাপান, কেনিয়া, লিচটেনস্টেইন, মৌরিতানিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, প্যারাগুয়ে, পোল্যান্ড, সেনেগাল, স্পেন, সুরিনাম, যুক্তরাজ্য, উরুগুয়ে ও জাম্বিয়া। ১ জানুয়ারি, ২০২৪ দেশগুলোর মেয়াদ শুরু হবে।

UNSC’ নতুন সদস্য: জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ১৫টি সদস্য নিয়ে গঠিত, যার ৫টি স্থায়ী সদস্য আর ১০টি অস্থায়ী সদস্য। প্রতি বছর ১০টি অস্থায়ী সদস্যের মধ্যে ৫টি সদস্যের মেয়াদ শেষ হয়। তাদের স্থলে নির্বাচিত হয় ৫টি নতুন দেশ। ৬ জুন, ২০২৩ নতুন অস্থায়ী সদস্য দেশগুলো— আলজেরিয়া, গায়ানা, দক্ষিণ কোরিয়া, সিয়েরা লিওন ও স্লোভেনিয়া। নতুন নির্বচিত ৫ সদস্য ১ জানুয়ারি, ২০২৪ – ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ মেয়াদের জন্য গ্যাবন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রাজিল, ঘানা ও আলবেনিয়ার স্থলাভিষিক্ত হবে।

ক্রেডিট রেটিং

কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির আর্থিক সক্ষমতা বা ঋণ দেওয়া হলে সেটা ঠিক সময়ে পরিশোধ করার সক্ষমতা কতটা রয়েছে, সেটাই ক্রেডিট রেটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। যেমন- আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কোনো দেশ যদি ঋণ নিতে চায়, তখন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এই রেটিংয়ের ভিত্তিতে বুঝতে পারে, দেশটির সময়মতো ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা কতটা রয়েছে। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে লেনদেন করতে হয়। এ ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের ঋণমানের ভিত্তিতে ঋণের শর্তাবলি ও সুদের হার নির্ধারণ হয়ে থাকে। কাজেই রেটিং ভালো হলে সহজ শর্তে, কম সুদে ঋণ পাওয়া যায়।

লুজান চুক্তির ১০০ বছর

২৪ জুলাই, ২০২৩ ঐতিহাসিক লুজান চুক্তির ১০০ বছর পূর্ণ হবে। এ প্রেক্ষাপটে জেনে নিন কেন, কোন কারণে চুক্তিটি করা হয়।

লুজান চুক্তি

২৪ জুলাই, ১৯২৩ সুইজারল্যান্ডের লুজান শহরে স্বাক্ষরিত হয় লুজান চুক্তি। লুজান শহরের নামানুসারে চুক্তির নামকরণ করা হয় লুজান চুক্তি। চুক্তিটির আনুষ্ঠানিক নাম Treaty of Peace & Exchange of War Prisoners with Turkey Signed at Lausanne। ১৪৩টি ধারাবিশিষ্ট চুক্তিটি লিখিত হয় ফরাসি ভাষায়। ২৩ আগস্ট ১৯২৩ তুরস্কের গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি এটি অনুমোদন করে। এরপর ১৬ জুলাই, ১৯২৪ অন্য রাষ্ট্রগুলোর আইনসভায়ও চুক্তিটি অনুমোদিত হয়। ৬ আগস্ট ১৯২৪ চুক্তিটি কার্যকর হয়। চুক্তির একপক্ষে ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের উত্তরসূরি তুরস্কের প্রতিনিধিরা, অপরপক্ষে ছিল মিত্রশক্তির দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, গ্রিস, ইতালি, জাপান, রোমানিয়া ও সাবেক যুগোশ্লাভিয়া।

পটভূমি

১৯১৯ সালে তুর্কি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সৃষ্টি হয়। ২৩ এপ্রিল, ১৯২০ তারা তুরস্কের এশিয়া অংশের আঙ্কারায় কনস্ট্যান্টিনোপলের বিকল্প সরকার হিসেবে ‘গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি’ নামে একটি নতুন আইনসভা গঠন করে। এ সরকারের নেতা ছিলেন উসমানীয় সেনাবাহিনীর বিখ্যাত

সমরনায়ক মুস্তফা কামাল পাশা। ১০ আগস্ট, ১৯২০ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ী মিত্রশক্তি উসমানীয় সাম্রাজ্যের সাথে Treaty of Sevres স্বাক্ষর করে।

সেইভ্রেস চুক্তির শর্তাবলি অত্যন্ত কঠোর এবং একপক্ষীয় হলেও সমগ্র উসমানীয় সাম্রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ মিত্রশক্তির দখলে থাকার কারণে তাদের প্রতি অনুগত থাকতে হয়। আঙ্কারাভিত্তিক সরকার সেইভ্রেস চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে গ্রিস, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে এবং ১৯২০ ও ১৯২১ সালে যথাক্রমে আর্মেনিয়া ও জর্জিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ইতিহাসে এটি ‘তুর্কি স্বাধীনতা যুদ্ধ’ হিসেবে পরিচিত। ১৯২০ সালে কনস্ট্যান্টিনোপলভিত্তিক উসমানীয় সরকারের সাথেও তাদের সংঘর্ষ হয়। এ যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন আঙ্কারাভিত্তিক সরকারকে সহায়তা করে। ১৯২২ সালের অক্টোবরে আঙ্কারাভিত্তিক সরকার গ্রিস, ফ্রান্স, আর্মেনিয়া ও কনস্ট্যান্টিনোপলভিত্তিক উসমানীয় সরকারের বিরুদ্ধে জয়ী হয় এবং আনাতোলিয়া উপদ্বীপ ও পূর্ব থ্রেস তুর্কি জাতীয়তাবাদীদের হস্তগত হয়। ১১ অক্টোবর, ১৯২২ উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়। ২৮ অক্টোবর, ১৯২২ মিত্রশক্তি পুনরায় আলোচনার জন্য আঙ্কারার প্রধান কামাল আতাতুর্কের এবং উসমানীয়দের সুলতান ষষ্ঠ মেহমেদ ওয়াহিদউদ্দিনের কাছে চিঠি দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কামাল পাশা ১ নভেম্বর সালতানাতের বিলুপ্তি ঘোষণা করে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছে যান। তার সরকার লুজান চুক্তির আলোচনায় অংশ নেয়। দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে অবশেষে ২৪ জুলাই, ১৯২৩ লুজান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বিষয়বস্তু

লুজান চুক্তির মাধ্যমে বর্তমান তুরস্কের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। একই সাথে নির্ধারিত হয় গ্রিস, ইরান, সিরিয়া ও ইরাকের সীমানা। চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়, তুরস্ক তার আগের আরব প্রদেশগুলোর ওপর কোনো দাবি জানাবে না এবং সাইপ্রাসে ব্রিটিশদের দখল এবং ডডেকানিজের ওপর ইতালীয় অধিকারকে স্বীকৃতি দেবে। স্বায়ত্তশাসনের দাবি পরিত্যাগ করবে। সাথে সাথে তুরস্ক আর্মেনিয়ার স্বত্ব ত্যাগ করবে। আর তুরস্কের ওপর প্রভাব বিস্তার করার দাবি ত্যাগ করবে মিত্র শক্তি এবং তুরস্কের আর্থিক বা সশস্ত্র বাহিনীর ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ চাপাবে না। তুরস্কের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বসফরাস ও দারদানেলিস প্রণালি দিয়ে চলাচলকারী জাহাজ থেকে তুরস্কের টোল আদায়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু পরে প্রণালি দুটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সুইজারল্যান্ডের মন্ট্রিক্স শহরে আরেকটি চুক্তি হয় ২০ জুলাই, ১৯৩৬। এই চুক্তিতে প্রণালিগুলোর কর্তৃত্ব পুরোপুরি তুরস্কের কাছে ছেড়ে দেওয়া হয় ।

উসমানীয় খিলাফত

সেলজুক রাজবংশের জামাতা আর্তুগুল গাজি রোমের সেলজুক সালতানাতের নিযুক্ত সোগুত কেন্দ্রিক একজন আঞ্চলিক শাসক ছিলেন। তাকেই উসমানীয় খিলাফতের স্বপ্নদ্রষ্টা মনে করা হয়। তিনি উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের পিতা। প্রতিষ্ঠাতার নামানুসারে খিলাফতের নামকরণ করা হয় উসমানীয় খিলাফত। ১৫২৬ সালে হাঙ্গেরি জয়ের মাধ্যমে ইউরোপের বিস্তীর্ণ অঞ্চল উসমানীয় খিলাফতের অধীন হয়। ১৬০০ ও ১৭০০ শতাব্দী ছিল উসমানীয় খিলাফতের উত্থানকাল। এ সময় উসমানীয় খিলাফত ৩৬টি প্রদেশ ও বেশ কিছু অনুগত রাজ্যে বিভক্ত ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১ নভেম্বর, ১৯২২ উসমানীয় খিলাফত বিলুপ্তি হলে খিলাফতের অধীন বলকান ও মধ্যপ্রাচ্যের সাবেক অংশগুলো ৪৯টি স্বাধীন রাষ্ট্রে আত্মপ্রকাশ করে। শেষ সুলতান ষষ্ঠ মেহমেদ ওয়াহিদউদ্দিন ১৭ নভেম্বর, ১৯২২ দেশ ছেড়ে চলে যান। সালতানাত বিলুপ্ত হলেও এ সময় খিলাফত বিলুপ্ত করা হয়নি। ষষ্ঠ মেহমেদের স্থলে দ্বিতীয় আবদুল মজিদ খলিফার পদে বসেন। ৩ মার্চ, ১৯২৪ খিলাফত বিলুপ্ত করা হলে উসমানীয় রাজবংশের প্রায় ৬০০ বছরের অধিক কালের শাসনের অবসান হয়।

আধুনিক তুরস্কের সুলতান এরদোয়ান

অটোমানদের পতনের পর কামাল আতাতুর্কের হাত ধরে ১৯২৩ সালে আধুনিক তুর্কি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর নতুন ধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করে তুরস্ক। তার ঠিক ১০০ বছর পর এরদোয়ানের হাত ধরে তুরস্কের আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তিগত সমৃদ্ধি উন্নতির দিকে। দুই দশকের ক্ষমতায় থাকাকালে বিভিন্ন সংকট সত্ত্বেও একক ও অদ্বিতীয় রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের মধ্য দিয়েই আবির্ভূত হয়েছে অটোমান সাম্রাজ্যের কোনো সুলতানের প্রতিচ্ছবি।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

১৪ মে, ২০২৩ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থী ৫০% ভোট না পেলে নির্বাচন রান অফ বা দ্বিতীয় দফায় গড়ায়। এবারের নির্বাচনে দেশটিতে ১০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়। এরপর প্রাপ্ত ভোটের শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে ২৮ মে, ২০২৩ দ্বিতীয় দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে কামাল কিলিচদারোগলুকে পরাজিত করে টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান।

তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ ও মন্ত্রিসভা

৩ জুন, ২০২৩ তৃতীয় মেয়াদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ এই শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এর মধ্য দিয়ে এরদোয়ানের শাসন ক্ষমতা তিন দশকে পা রাখল।

নতুন মন্ত্রিসভা: ৩ জুন, ২০২৩ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ১৮ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেন। এটি দেশটির ৬৭তম মন্ত্রিসভা।  নতুন মন্ত্রিসভায় উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হলেন-

ভাইস প্রেসিডেন্ট: সেভদেত ইলমাজ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী: হাকান ফিদান

ট্রেজারি ও অর্থমন্ত্রী: মেহমেত সিমসেক

প্রতিরক্ষামন্ত্রী: ইয়াসার গুলার

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: আলী ইয়ারলিকায়া।

• প্রথম নারী গভর্নর: ৮ জুন, ২০২৩।

তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম নারী গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান হাফিজি গায়ে আরকান। ৯ জুন, ২০২৩ তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন ।

একে পার্টি

তুরস্কের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল একে পার্টি। ১৪ আগস্ট ২০০১ প্রতিষ্ঠিত দলটির তুর্কি ভাষায় নাম Adalet ve Kalkinma Partisi (AKP) আর ইংরেজিতে Justice and Development Party। একে পার্টি ৩ নভেম্বর ২০০২ নির্বাচনের মাধ্যমে তুরস্কের ক্ষমতা লাভ করে। এ সময় দলটি তুর্কি পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয় পায়। বর্তমানে এরদোয়ানের নেতৃত্বে দলটি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং দেশটির রাজনীতিতে একটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন করে।

রুটি বিক্রেতা থেকে সুলতান

এরদোয়ান ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৪ ইস্তানবুলের কাছিমপাশা শহরতলিতে জনগ্রহণ করেন। তার বাবা আহমদ এরদোয়ান ছিলেন তুরস্ক কোস্ট গার্ডের একজন সদস্য। এরদোয়ানের বয়স যখন ১৩ বছর তখন তার বাবা ইস্তানবুলে আসেন। উদ্দেশ্য ছিল পাঁচ সন্তানকে ভালো লেখাপড়া শেখানো। তরুণ বয়সে স্কুলের মাসোহারা মেটাতে এরদোয়ান বাড়তি উপার্জনের জন্য লেবুর শরবত এবং রুটি বিক্রি করতেন। তিনি মারমারা ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পড়াশুনা করেন।

রাজনৈতিক উত্থান

১৯৭৬ সালে নাজিমুদ্দিন এরবাকানের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল স্যালভেশন পার্টির বিয়োগ্লু যুবক শাখার প্রধান নিযুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রথম রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেন এরদোয়ান। এরদোয়ান পরবর্তীতে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

টাইম লাইনে রাজনৈতিক জীবন

২৭ মার্চ, ১৯৯৪-৬ নভেম্বর ১৯৯৮: ইস্তানবুলের মেয়র।

১৪ আগস্ট, ২০০১: আবদুল্লাহ গুলের সাথে মিলে ইসলামপন্থী একে পার্টি গঠন।

১৪ মার্চ, ২০০৩: প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

২৯ আগস্ট, ২০০৭: দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী।

৬ জুলাই, ২০১১: তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী।

১০ আগস্ট, ২০১৪: দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী।

২৮ আগস্ট, ২০১৪: দেশটির ১২তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ ।

১৬ এপ্রিল, ২০১৭: সাংবিধানিক গণভোটে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ।

২৪ জুন, ২০১৮: প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী।

৯ জুলাই, ২০১৮: প্রধানমন্ত্রী পদ বিলুপ্ত।

২৮ মে, ২০২৩: তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত।

কবিতা পাঠ ও কারাবাস

১২ ডিসেম্বর, ১৯৯৭ তুরস্কের শির্ট শহরের এক সমাবেশে ঐতিহাসিক বক্তব্য দেন এরদোয়ান। সেই বক্তব্যে তুরস্কের কবি জিয়া গোকালপ-এর ‘সৈন্যদের দোয়া’ কবিতার কয়েকটি লাইন, “মসজিদ হচ্ছে আমাদের ব্যারাক, গম্বুজ হচ্ছে আমাদের হেলমেট এবং মিনার হচ্ছে আমাদের বেয়নেট” আবৃত্তি করেন। এ জন্য এরদোয়ানকে দশ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে তিনি মেয়র পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তার সাজার সময়কাল ছিল ২৪ মার্চ, ১৯৯৯ – ২৭ জুলাই, ১৯৯৯।

Leave a Reply