কালানুক্রমিক ঘটনাবলি
০১.১০.২০২০
♦ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI)- এর সুবর্ণজয়ন্তী পালিত।
♦ ‘উন্নত স্যানিটেশন নিশ্চিত করি, করোনাভাইরাসমুক্ত জীবন গড়ি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘স্যানিটেশন মাস ২০২০’ পালন শুরু।
০২.১০.২০২০
♦ ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে উৎপাদনশীলতা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস পালন।
০৪.১০.২০২০
♦ বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন (BPSC) এ নতুন সদস্য যোগ ও শপথ গ্রহণ (শামিম আহসান)। তাকে নিয়ে কমিশনের নতুন সদস্য সংখ্যা ১৪।
♦ দুই সপ্তাহব্যাপী জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু।
♦ জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে ইউনিসেফ-এর শুভেচ্ছাদূত ঘোষণা।
০৬.১০.২০২০
♦ ‘নাগরিক অধিকার করতে সুরক্ষণ ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতীয় জন্মনিবন্ধন দিবস পালন।
♦ ‘নতুন বিশ্ব কল্পনাতে আমরা থাকবো কন্যাশিশুর সাথে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২০ পালিত।
০৭.১০.২০২০
♦ করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
♦ কুমিল্লা সেনানিবাসের এম আর চৌধুরী প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনাবাহিনী প্রধান জে.আজিজ আহমেদ কর্তৃক ৬টি ইউনিটকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান।
♦ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য সরকারের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমান চলাচল চুক্তি সাক্ষরিত হয়।
♦ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ১০,২৪০টি পিলারের গায়ে খোদাই করে লেখা ‘পাক/পাকিস্তান’ পরিবর্তন করে ‘বিডি/বাংলাদেশ’ লিখেছে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (BGB)। ৭ অক্টোবর ২০২০ একথা জানান বাহিনীর পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান।
০৮.১০.২০২০
♦ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে।
♦ এ এম আমিন উদ্দিনকে ১৬তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান।
♦ কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সংযোগকারী অলওয়েদার বা ‘আভুরা’ সড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
০৯.১০.২০২০
♦ বিশ্ব ডাক দিবস উপলক্ষ্যে ডাক অধিদপ্তর ১০ টাকা মূল্যমানের স্মারক ডাকটিকিট এবং ১০ টাকা মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন।
১০.১০.২০২০
♦ ‘সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য: অধিক বিনিয়োগ অবাধ সুযোগ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস-২০২০ পালিত।
১১.১০.২০২০
♦ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে সবাইকে জাতীয় বেতন কাঠামোর ১৩তম গ্রেড প্রদান করতে নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
১৩.১০.২০২০
♦ ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংযোজন করে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০ জারি।
১৪.১০.২০২০
♦ তিনদিনের সফরে বাংলাদেশ আসেন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই বিগান।
♦ বিক্রি হয়ে যায় ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানা নামে ‘ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড’।
♦ ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২০’ শুরু হয়।
১৫.১০.২০২০
♦ পঞ্চগড় ও রাজশাহী জেলার মধ্যে চলাচলকারী প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন ‘বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস’ উদ্বোধন।
♦ ৭ মার্চ ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণা করে পরিপত্র জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
♦ ‘সব ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে তথ্য মন্ত্রণালয়।’ –তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারি করে।
১৮.১০.২০২০
♦ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মদিন পালিত।
♦ তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলা মিত্রের ৯৬তম জন্মদিন পালন।
♦ প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেয় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
১৯.১০.২০২০
♦ প্রখ্যাত কবি ফররুখ আহমদের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন।
২০.১০.২০২০
♦ রাশিয়ান পতাকাবাহী ‘এমভি ডাইনি’ নামক জাহাজে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের মূল যন্ত্রাংশ নিউক্লিয়ার রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা পারমাণবিক চুল্লি ও একটি স্টিম জেনারেটর মোংলা বন্দরে পৌঁছে।
২১.১০.২০২০
♦ করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের মাধ্যমিক স্তরে বার্ষিক পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
২২.১০.২০২০
♦ মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
২৬.১০.২০২০
♦ চলচ্চিত্র পরিচালনায় ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন চিত্রনায়ক আলমগীর।
আলোচিত বাংলাদেশ
বঙ্গবন্ধুর সর্ববৃহৎ ম্যুরাল উন্মোচনঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ বরিশালে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বড় ম্যুরাল উন্মোচন করা হয়। নগরীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারস্থ বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামের দক্ষিণ পাশের দেওয়ালে বিদেশি দামি মূল্যবান পাথর দিয়ে বঙ্গবন্ধুর বুকে জড়ানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবেগঘন এ ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়। ৫০ ফুট উঁচু ও ৪০ ফুট প্রস্থের এ মুরালের পেছনে জাতীয় পতাকা ফুটিয়ে তোলা হয়। এটি দেশের সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল।
ভাস্কর্যে বঙ্গবন্ধুর বীরত্বগাথাঃ
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সামনে খোলা আঙিনায় স্থাপন করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এক বিশাল আকৃতির অবয়ব। এতে তর্জনী উঁচিয়ে তেজোদীপ্ত অভিব্যক্তিতে ভাষণ দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু। শিল্পের আশ্রয়ে উপস্থাপিত হয়েছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের প্রেক্ষাপট। ফাইবার গ্লাস দ্বারা সৃজিত ১২ ফুট উচ্চতার অবয়বটি মেলে ধরেছে বঙ্গবন্ধুর বীরত্বগাথা। ভাস্কর্যটি গড়েছেন সব্যসাচী ভাস্কর উত্তম ঘোষ।
বঙ্গবন্ধুর সর্ববৃহৎ তর্জনী ভাস্কর্যঃ
নরসিংদী শহরের প্রবেশমুখে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের সাহেপ্রতাপ বাসস্ট্যান্ড মোড়ে ৪১ ফুট উচ্চতার একটি তর্জনী ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের অবিস্মরণীয় ভাষণের বিষয়কে উপজীব্য করে নির্মিতব্য এ ভাস্কর্যই বঙ্গবন্ধুর সর্ববৃহৎ তর্জনী ভাস্কর্য।
অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ব্রেইল সংস্করণঃ
৭ অক্টোবর ২০২০ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের ব্রেইল সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর উদযাপনের অংশ হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ৬ খণ্ডে অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থের ব্রেইল সংস্করণ প্রকাশ করে। ১২ জুন ২০১২ প্রকাশিত জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থটি সারা বিশ্বে ইতিমধ্যে অনুদিত হয়েছে ১৪টি ভাষায় ইংরেজি, উর্দু, জাপানি, চীনা, আরবি, ফরাসি, হিন্দি, তুর্কি, নেপালি, স্প্যানিশ, অসমীয়া, রুশ, ইতালি ও মালয়। এর মধ্যে ইতালি ও মালয় ভাষায় গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি। [তথ্যসূত্র : প্রধানমন্ত্রী] বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ দুটি গ্রন্থের নামকরণ করেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা। [তথ্যসূত্র : প্রধানমন্ত্রী] বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের রিপোর্টগুলো নিয়ে প্রকাশিত গ্রন্হ Secret Documents Intelligence Branch on Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman !
পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারঃ
১২ অক্টোবর ২০২০ ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় ‘বঙ্গবন্ধু স্কয়ার’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। স্থাপত্য অধিদপ্তর প্রণীত নকশা অনুযায়ী, নির্মিত হবে এ স্কয়ার। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৫ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর সড়কের ১৭ নম্বর প্লটে ২.৩১৯ একর জমিতে নির্মিতব্য ঐতিহাসিক এ স্থাপনার নির্মাণে মোট খরচ হবে ৫৫ কোটি ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জাতির পিতার জন্ম থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পূর্ববর্তী ও স্বাধীনতাসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার মৃত্যু পর্যন্ত ইতিহাস তুলে ধরা হবে।
৭ মার্চ ঐতিহাসিক দিবসঃ
৭ অক্টোবর ২০২০ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের দিনটিকে ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। ১৫ অক্টোবর ২০২০ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ৭ মার্চকে ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে পালনের পরিপত্র জারি করে। পরিপত্র অনুযায়ী দিবসটি ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হবে। সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থা দিবসটি তাদের নিজস্ব কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপন ও বাস্তবায়ন করবে। তবে এ দিন কোনো ছুটি থাকবে না।
বঙ্গবন্ধুর অভিধানঃ
বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে শেষদিন পর্যন্ত (৫৫ বছরের জীবন) সময় রেখায় সমগ্র জীবন ও চারপাশের ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত হয় বঙ্গবন্ধু অভিধান।
প্রথম নৌকা জাদুঘর:
দেশের দক্ষিণ উপকূলের জেলা বরগুনায় স্থাপন করা হচ্ছে দেশের প্রথম নৌকা জাদুঘর। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বরগুনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিতব্য নৌকার আদলে নকশা করা এ জাদুঘরের নাম রাখা হয় ‘বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর’। ৮ অক্টোবর ২০২০ জাদুঘরটির ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন ও স্থাপনা নির্মাণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। বরগুনা শহরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাস্তার উত্তরপ্রান্তে এবং আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের পূর্বপ্রান্তে পুরাতন পাবলিক লাইব্রেরির ০.৭ একর জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে এ জাদুঘর। এতে স্থান পাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০০ ধরনের নৌকার অনুকৃতি এবং নৌকা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য। বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘরের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং পরিকল্পনার অগ্রপথিক বরগুনার এসপি মোস্তাইন বিল্লাহ।
জেল হত্যা দিবস ও জাতীয় চার নেতাঃ
৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে কলঙ্কময়, রক্তঝরা ও বেদনাবিধুর দিন। ১৯৭৫ সালের এ দিনে জাতীয় চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকাবস্থায় এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
হত্যাকাণ্ড ও বিচার পরিক্রমা
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ : বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্য কর্তৃক সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর জাতীয় চার নেতাকে তাদের সরকারে যোগদানের প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর এ নেতারা সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর তাদের গৃহবন্দি করা হয়।
■ ২৩ আগস্ট ১৯৭৫ : জাতীয় চার নেতাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি করা হয়।
■ ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ : ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
■ ৪ নভেম্বর ১৯৭৫ : তৎকালীন উপ-কারা মহাপরিদর্শক কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
■ ১৫ অক্টোবর ১৯৯৮ : দীর্ঘ ২৩ বছর পর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
■ ২০ অক্টোবর ২০০৪ : মামলার রায়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মতিউর রহমান তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
■ ২৮ আগস্ট ২০০৮ : রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে হাইকোর্ট মোসলেম উদ্দিনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলেও মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্য দুই আসামিকে খালাস দেন।
■ ৩০ এপ্রিল ২০১৩ : হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে ২৩৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
■ ১ ডিসেম্বর ২০১৫ : সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে ২৩৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
■ ১১ এপ্রিল ২০২০ : জেল হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায়।
জাতীয় চার নেতা
■ সৈয়দ নজরুল ইসলাম (জন্ম : ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২, কিশোরগঞ্জ):
বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা। ১০ এপ্রিল ১৯৭১ সৈয়দ নজরুল ইসলামকে মুজিবনগর সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি করা হয়। রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকায় তার অনুপস্থিতিতে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে নয় মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন।
উপ-রাষ্ট্রপতি ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি : ১০ এপ্রিল ১৯৭১-৭২ জানুয়ারি ১৯৭২; উপ-রাষ্ট্রপতি : ২৬ জানুয়ারি ১৯৭৫-১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ।
শিল্পমন্ত্রী : ১৩ জানুয়ারি ১৯৭২-২৬ জানুয়ারি ১৯৭৫।
■ তাজউদ্দীন আহমদ (২৩ জুলাই ১৯৫২, গাজীপুর):
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তাজউদ্দীন আহমদ বাংলার ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকার কারণে। ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করে। এরপর তার প্রজ্ঞা, মেধা দিয়ে দেশকে ৯ মাসে শত্রুমুক্ত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন।
উপাধি : বঙ্গতাঁজ; প্রধানমন্ত্রী: ১৭ এপ্রিল ১৯৭১-১২ জানুয়ারি ১৯৭২।
অর্থমন্ত্রী: ১৩ জানুয়ারি ১৯৭২-২৬ অক্টোবর ১৯৭৪।
■ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী (জন্ম: ২৬ জানুয়ারি ১৯১৯, সিরাজগঞ্জ):
বাংলাদেশের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী। ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ তিনি মুজিবনগর সরকারের অর্থ, বাণিজ্য, শিল্প ও যোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি বঙ্গবন্ধুর নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের (বাকশাল) মহাসচিব নির্বাচিত হন।
প্রধানমন্ত্রী: ২৬ জানুয়ারি ১৯৭৫-১৫ আগস্ট ১৯৭৫। অর্থ, বাণিজ্য, শিল্প ও যোগাযোগমন্ত্রী : ১০ এপ্রিল ১৯৭১-১২ জানুয়ারি ১৯৭২,
যোগাযোগমন্ত্রী: ১৩ জানুয়ারি ১৯৭২-১৫ আগস্ট ১৯৭৫।
■ এ এইচ এম কামারুজ্জামান (জন্ম: ২৬ জুন ১৯২৬ – ৩ নভেম্বর নাটোর):
বাংলাদেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা। মুজিবনগর সরকারের স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: ১০ এপ্রিল ১৯৭১-১২ জানুয়ারি ১৯৭২।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালনে সরকারের নতুন নির্দেশনাঃ
■ ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস : ১৮টি
শহিদ দিবস/আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, জাতির পিতার জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, গণহত্যা দিবস, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, মে দিবস, বৌদ্ধ পূর্ণিমা, শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর জন্মবার্ষিকী, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর জন্মবার্ষিকী, জাতীয় শোক দিবস, বিজয় দিবস, বড়দিন, বাংলা নববর্ষ, রবীন্দ্র জয়ন্তী, নজরুল জয়ন্তী, ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আযহা, ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা), দুর্গাপূজা।
নিদের্শনা : যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন বা পালন করা হবে।
■ ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস : ৩৪টি
জাতীয় সমাজসেবা দিবস, জাতীয় টিকা দিবস, জাতীয় গ্রন্হাগার দিবস, জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস, জাতীয় বীমা দিবস, জাতীয় ভোটার দিবস, জাতীয় পাট দিবস, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস, বিশ্ব আবহাওয়া দিবস, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস ও জাতীয় ক্রীড়া দিবস, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস, মুজিবনগর দিবস, নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস, জাতীয় চা দিবস, বিশ্ব পরিবেশ দিবস, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস, বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস, জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস, জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস, আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস, বিশ্ব নৌ দিবস, জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস, শিশু অধিকার দিবস, আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস, বিশ্ব খাদ্য দিবস, জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস, জাতীয় যুব দিবস, জাতীয় সমবায় দিবস, বিশ্ব এইডস দিবস, জাতীয় বস্ত্র দিবস, আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস, বেগম রোকেয়া দিবস, ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস।
নিদের্শনা: যেসব দিবস ঐতিহ্যগতভাবে পালন করা হয়ে থাকে অথবা বর্তমানে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণের জন্য বিশেষ সহায়ক, সেসব দিবস উল্লেখযোগ্য কলেবরে উদযাপন/পালন করা যেতে পারে। মাননীয় মন্ত্রিবৃন্দ এ সকল অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত থাকবেন এবং এ ধরনের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বিবেচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ পর্যায়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সরকারি উৎস হতে সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা যেতে পারে।
■ ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস : ৩৩টি
বার্ষিক প্রশিক্ষণ দিবস, জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস, জাতীয় ক্যান্সার দিবস, আন্তর্জাতিক নারী অধিকার ও আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস, জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস, বিশ্ব পানি দিবস, বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস, বিশ্ব মেধা সম্পদ দিবস, জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস, বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম দিবস, বিশ্ব রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস, বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস, বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস, বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস, বিশ্ব খরা ও মরুকরণ প্রতিরোধ দিবস, আন্তর্জাতিক সমবায় দিবস, আন্তর্জাতিক ওজোন সংরক্ষণ দিবস, বিশ্ব পর্যটন দিবস, বিশ্ব হার্ট দিবস,আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস, বিশ্ব বসতি দিবস, জাতীয় জন্ম নিবন্ধন দিবস, বিশ্ব ডাক দিবস, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস, বিশ্ব সাদা ছড়ি দিবস, জাতিসংঘ দিবস, জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস, বিশ্ব ডায়াবেটিক দিবস, প্যালেস্টাইনি জনগণের প্রতি আন্তর্জাতিক সহমর্মিতা দিবস, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, জাতীয় জীববৈচিত্র দিবস, জাতীয় শিক্ষক দিবস।
নির্দেশনা: বিশেষ খাতের প্রতীকী দিবসগুলো সীমিত কলেবরে উদযাপন/পালন করা হবে। মন্ত্রিরা এসব দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিতির বিষয় বিবেচনা করবেন। উন্নয়ন খাত থেকে এসব দিবস পালনের জন্য কোনো বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হবে না।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নির্দেশনা
♦ তিন ধরনের দিবস ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো আরও কিছু দিবস উদযাপন/পালন করে থাকে, যেগুলো গতানুগতিক ধরনের। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এগুলো পুনরাবৃত্তিমূলক এবং বর্তমান সময়ে তেমন কোনো গুরুত্ব বহন করে না। সরকারের সময় এবং সম্পদ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকারি সংস্থাসমূহ এ ধরনের দিবস পালনের সঙ্গে সম্পৃক্তি পরিহার করতে পারে।
♦ শিক্ষা সপ্তাহ, প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ, বিজ্ঞান সপ্তাহ, বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ (১-৭ আগস্ট), বিশ্ব শিশু সপ্তাহ (২৯ সেপ্টেম্বর- ৫ অক্টোবর), সশস্ত্র বাহিনী দিবস (২১ নভেম্বর), পুলিশ সপ্তাহ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সপ্তাহ, আনসার সপ্তাহ, মৎস্য পক্ষ, বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং জাতীয় ক্রীড়া সপ্তাহ পালনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা নিয়ে কর্মসূচি গ্রহণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত কর্মসূচি অনুযায়ী, এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হবে।
♦ সাজসজ্জা ও বড় ধরনের বিচিত্রানুষ্ঠান যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। তবে, বেতার ও টেলিভিশনে আলোচনা এবং সীমিত আকারে সেমিনার/সিম্পোজিয়াম আয়োজন করা যাবে। কর্মদিবসে সমাবেশ/শোভাযাত্রা পরিহার করা হবে।
♦ কোনো সপ্তাহ পালনের ক্ষেত্রে অনুষ্ঠানসূচি সাধারণভাবে তিন দিনের মধ্যে সীমিত থাকবে।
জবি’র প্রথম হল উদ্বোধনঃ
২০ অক্টোবর ২০২০ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আবাসিক হল উদ্বোধন করা হয়। ক্যাম্পাসের বিপরীত পাশে ছাত্রীদের জন্য নির্মিত এ হলের নাম রাখা হয় ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা হল’ ১৬ তলা বিশিষ্ট এ হলের আসন সংখ্যা ১, ০০০।
প্রথম পরিচালক অধ্যাপক ড. ফকরুলঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবপ্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি’- এর প্রথম পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ইউজিসি অধ্যাপক ড. ফকরুল আলমকে। ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান ৬ অক্টোবর ২০২০ তাকে এ পদে নিয়োগ দেন। ড. ফকরুল আগামী তিন বছরের জন্য পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি দেশের একজন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, গবেষক ও অনুবাদক । তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোচনামচার’সহ অসংখ্য গ্রন্হের অনুবাদক।
বাংলাদেশে নতুন আর্চবিশপঃ
৭৫ বছর পার হওয়ায় আর্চবিশপের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির জন্য ভ্যাটিকানে ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সেসের কাছে আবেদন করেন বাংলাদেশের খ্রিস্টান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু প্রথম বাঙালি কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও। পোপ ফ্রান্সিস তার সে আবেদন মঞ্জুর করে বাংলাদেশের নতুন আর্চবিশপ হিসেবে নিযুক্ত করেন বিজয় নিসফরাস ডি’ক্রুজকে। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ভ্যাটিকান নিউজ তার এ নিয়োগের কথা জানায়। বিশপ ডি’ক্রুজ ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬ ঢাকার নবাবগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।
ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডঃ
১৩ অক্টোবর ২০২০ সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করে। এর আগে ১২ অক্টোবর ২০২০ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। ২০০০ সালের ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন’ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি এতদিন ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আর যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যুঘটে তাহলে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড। পাশাপাশি দুই ক্ষেত্রেই রয়েছে অর্থদণ্ডের বিধান। অধ্যাদেশটিকে আইনে রূপ দিতে ২৫ অক্টোবর- ২০২০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন, ২০২০’- এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
প্রথম মৃত্যুদণ্ডের রায়ঃ
১৫ অক্টোবর ২০২০ টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন ৮ বছর আগে এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে গণধর্ষণের দায়ে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রদান করেন। ১৩ অক্টোবর ২০২০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০২০ অধ্যাদেশ আকারে জারি হওয়ার পর ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের প্রথম রায় এটি।
সেনা কর্মকর্তাকে বিরল সম্মানঃ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসে প্রথমবারের মত একজন সেনা কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়, যিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত সাত বছরের বেশি সময় ধরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে কোমায় রয়েছেন। লে.কর্নেল দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজার চাকরির মেয়াদের শেষ দিন ১২ অক্টোবর ২০২০ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে কর্নেল র্যাংকে উন্নীত করা হয়। তার পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে হাসপাতালের কক্ষেই সম্পন্ন হয় পদোন্নতির আনুষ্ঠানিকতা। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে হার্ট অ্যাটাকের পর থেকেই কোমায় চলে যান তিনি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় তার অসুস্থতাকে বলা হয় ‘হাইপোস্কিক স্কিমিক ইনজুরি টু ব্রেইন ইফেক্টস’।
সেনাবাহিনীর ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সের অধিনায়কঃ
বাংলাদেশ ইতিহাসে মেডিকেল কোরের হেলথ কেয়ার ম্যানেজমেন্টের প্রথম নারী কর্মকর্তা হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি পান নাজমা বেগম। তিনিই প্রথম নারী কর্মকর্তা, যিনি ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সের অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত হন।
দেশের প্রথম ভূতাত্ত্বিক জাদুঘরঃ
বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর (BMD) উদ্যোগে সিলেটের জাফলংয়ে স্থাপিত হবে দেশের প্রথম ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর। ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জাফলংয়ের ২২.৫৯ একর ভূমিকে ভূতাত্ত্বিক ঐতিহ্য (Geological Heritage) হিসেবে ঘোষণা করে এ ভূমিতেই নির্মাণ করা হবে। আন্তর্জাতিকমানের ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর।
বিক্রি হয়ে যায় এশিয়ার প্রথম সার কারখানাঃ
১৪ অক্টোবর ২০২০ বিক্রি হয়ে যায় এশিয়ার প্রথম সার কারখানা ‘ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড’। ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা নামেই এটি বেশি পরিচিত। দীর্ঘদিন থেকে যন্ত্রপাতি বিকল থাকা ও অব্যাহত লোকসানের মুখে অবশেষে বিক্রি করে দেয়া হয় রাষ্ট্রায়ত্ত এ সার কারখানাটি। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সিলেটের ‘মেসার্স আতাউল্লাহ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ১০৩ কোটি ৭৫ হাজার টাকায় সারকারখানাটির সব যন্ত্রপাতি কিনে নেন।
‘উপজেলা আবহাওয়া’ পোর্টালের যাত্রা শুরু:
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও গবাদিপশু ব্যবস্থাপনায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসব্যবস্থা চালু হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক ঝুঁকি এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য উন্নত আবহাওয়া ও বন্যাসংক্রান্ত তথ্যব্যবস্থা’ প্রকল্পের আওতায় রিজিওনাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি-হ্যাজার্ড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম (রাইমস) ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের সমন্বিত উদ্যোগে এ ব্যবস্থা চালু হয়। প্রকল্পটি কেয়ার বাংলাদেশের সৌহার্দ্য-৩ কার্যক্রমের অংশ। সৌহার্দ্য-৩ খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কিত একটি কার্যক্রম, যা যুক্তরাষ্ট্রের USAID’র আর্থিক সহায়তায় এবং বাংলাদেশ সরকারের সম্পূরক সহায়তায় বাস্তবায়িত।
২০২৪ সালে চালু হতে পারে প্রথম মেট্রোরেলঃ
দেশের প্রথম মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) কাজ শেষ হতে পারে ২০২৪ সালে এবং একই বছরই চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-৬) সার্বিক কার্যক্রমের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা মহানগরী ও তৎসংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে ও পরিবেশ উন্নয়নে অত্যাধুনিক গণপরিবহন হিসেবে ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) আওতায় মোট ১২৮.৭৪১ কিমি দীর্ঘ এবং ১০৪টি স্টেশনবিশিষ্ট একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। এর মধ্যে ৬৭.৫৬৯ কিমি উড়াল এবং ৬১.১৭২ কিমি পাতালপথ। প্রকল্পের ৬টি এমআরটি লাইনের প্রথমটির (এমআরটি লাইন-৬) কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাব্য সময় ২০২৪ সাল। এ প্রকল্পে ৮টি প্যাকেজ রয়েছে।
প্রকল্পের মোট ৮টি প্যাকেজে কাজের অগ্রগতি
প্যাকেজ ১: এর আওতায় (ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু হয় ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬; শেষ হয়েছে।
প্যাকেজ ২: ডিপো এলাকার কাজ শুরু হয় ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭। ডিপোর অভ্যন্তরে মোট ৫২টি অবকাঠামোর নির্মাণকাজ চলছে, যার অগ্রগতি ৭৩%।
প্যাকেজ ৩ ও ৪: উত্তরা নর্থ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিমি ভায়াডাক্ট ও নয়টি স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ১ আগস্ট ২০১৭। ৩৯৩টি পিয়ার হেডের মধ্যে ৩৯২টি এবং ১১.৭৩ কিমি ভায়াডাক্টের মধ্যে ১০.৯০ কিমি দৃশ্যমান হয়েছে। অগ্রগতি ৭৩.৮০%।
প্যাকেজ ৫: আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত ৩.১৯৫ কিমি ভায়াডাক্ট ও ৩টি স্টেশন নির্মাণকাজের সার্বিক অগ্রগতি ৪৮.১২%।
প্যাকেজ ৬: কারওয়ান বাজার থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ৪.৯২২ কিমি ভায়াডাক্ট ও চারটি স্টেশন নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৪৯.০৮%। এ অংশের কাজ শুরু হয় আগস্টে ২০১৮।
প্যাকেজ ৭: ইলেকট্রিক্যাল এন্ড মেকানিক্যাল সিস্টেম সরবরাহ ও নির্মাণকাজ ১১ জুলাই ২০১৮ শুরু হয়; অগ্রগতি ৪৮.৫০%।
প্যাকেজ ৮: রোলিং স্টক বা রেল কোচ ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। অগ্রগতি ৩০.০৮%।
এইচএসসি পরীক্ষা ২০২০ বাতিলঃ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক তথা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করা হয়। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফল মূল্যায়ন করে নির্ধারণ করা হবে এইচএসসি’র ফলাফল। ডিসেম্বর ২০২০-এর মধ্যে প্রকাশ করা হবে ফলাফল। ৭ অক্টোবর ২০২০ শিক্ষামন্ত্রীর এমন ঘোষণার মধ্য দিয়ে ২০২০ সালের এইচএসসি/সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১৩,৬৫,৭৮৯ জন পরীক্ষার্থীর সবাই কৃতকার্য হতে যাচ্ছে, অর্থাৎ পাসের হার ১০০%। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো পাবলিক পরীক্ষা বাতিল হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
পদক–পুরস্কার ও সম্মাননা গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের ৬ পদক অর্জনঃ
বাংলাদেশ এবার ১৬তম বারের মতো অংশগ্রহণ করে। এ সময়ে বাংলাদেশের অর্জন ১টি সোনা, ৭টি রুপা, ২৮টি ব্রোঞ্জ ও ৩১টি সম্মানসূচক স্বীকৃতি। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত ৬১তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে (IMO) বাংলাদেশ ১টি রুপা ও ৫টি ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে। মোট ১১৮ নম্বর পেয়ে ১০৭টি দেশের মধ্যে ৩৮তম স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশ। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ IMO- এর ওয়েবসাইটে পুরস্কার বিজয়ীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ আসরে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ নম্বর পায় বাংলাদেশ দল। এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দলের সবাই পদক পেয়েছে। যথারীতি ২১৫ নম্বর পেয়ে চীন প্রথম, ১৮৫ নম্বর পেয়ে রাশিয়া ফেডারেশন দ্বিতীয় ও ১৮৩ নম্বর পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় হয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর অনলাইন আয়োজনের মাধ্যমে IMO শুরু হয়। ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো কার্যালয়ে বাংলাদেশি প্রতিযোগীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে। অন্য দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ৬১তম, পাকিস্তান ৮২তম, মিয়ানমার ৯১তম ও নেপাল ১০২তম।
বাংলাদেশের ৬ পদকঃ
৪২ নম্বরের মধ্যে ২৯ পেয়ে দেশের জন্য একমাত্র রুপার পদকটি পেয়েছে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী আহমেদ ইত্তিহাদ । অন্য পাঁচ সদস্যের সবাই ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে। তারা হলেন – এসওএস হারম্যান মেইনার কলেজের এম আহসান-আল-মাহীর (২০ নম্বর), ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের মো. মারুফ হাসান রুবাব (১৯), কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের আদনান সাদিক (১৮), নটর ডেম কলেজের রাইয়্যান জামিল (১৬) ও ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের সৌমিত্র দাস (১৬)।
বাংলাদেশের দারিদ্র্য চিত্রঃ
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (GED) প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণ শুরুর পর জুন শেষে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ২৯.৪ শতাংশে পৌঁছেছে আর অতিদারিদ্র্যের হার ২০.৫%। অবশ্য কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি গবেষণা সংস্থার জরিপের ফল সরকারি হিসাবের তুলনায় বেশি। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ’র (CPD) হিসাবে, করোনায় দারিদ্র্যের হার বেড়েছে ৩৫%। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা South Asian Network on Economic Modeling (SANEM)- এর জরিপ অনুযায়ী দারিদ্র্যের হার বেড়ে ৪০.৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
বিবিএস জরিপ ২০১৬ | পরিকল্পনা কমিশনের প্রাক্কলন | ||
জুন ২০১৯ | জুন ২০২০ | ||
দারিদ্র্যের হার | ২৪.৩% | ২০.৫% | ২৯.৪% |
অতিদারিদ্র্যের হার | ১২.৯% | ১০.৫% | ২০.৫% |
বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, দিনে ১.৯ ডলারের বা ১৬১ টাকার কম আয়ের মানুষ অতিদরিদ্র। বিশ্বব্যাংক ২০১৫ সালে হতদরিদ্রের হার এভাবে সংজ্ঞায়িত করে। এর আগে ১.২৫ মার্কিন ডলারের কম আয়ের মানুষকে অতিদরিদ্র হিসেবে ধরা হতো। অন্যদিকে, দারিদ্র্য হচ্ছে ন্যূনতম জীবনযাত্রার মান অর্জনের অক্ষমতা।
এছাড়াও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং এবং icddr,b যৌথভাবে বাংলাদেশের সামাজিক জনমিতির ও স্বাস্থ্যসেবা সূচক নিয়ে একটি জরিপ করে। জরিপ অনুযায়ী-
♦ বিভাগওয়ারী দরিদ্র খানার হার : বরিশাল ৪১.২%, রংপুর ৩৭.৮%, ময়মনসিংহ ৩২.২%, সিলেট ২৮.৯%, রাজশাহী ২২.২%, চট্টগ্রাম ১৮.২%, খুলনা ১৪.৮% ও ঢাকা বিভাগ ৮.৫%।
♦ বাংলাদেশের দরিদ্রখানা : ২০.৯%
♦ দরিদ্রখানার হারে শীর্ষ জেলা : পটুয়াখালী (৬০.৬%)।
♦ দরিদ্রখানার হারে সর্বনিম্ন জেলা : ঢাকা (০.৭%)।
নো মাস্ক নো সার্ভিসঃ
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। ২৫ অক্টোবর ২০২০ অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, মসজিদ ও অন্যান্য উপাসনালয়ে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামুলক করা হয়। এখন থেকে মাস্ক ছাড়া আসলে কাউকে সরকারি ও বেসরকারি অফিসে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। মাস্ক পরিধান ছাড়া কেউ কোনো সেবার জন্য গেলে তাকে সেই সেবা দেয়া হবে না। বেসরকারি অফিসে এ নীতি মানা হচ্ছে কি না, সেজন্য পরিদর্শন করা হবে।
নতুন করে ৪৩ পণ্যে বাধ্যতামূলক মান সনদঃ
ভোক্তা চাহিদা বিবেচনায় আরও ৪৩টি পণ্যকে বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (BSTI)। ২৫ অক্টোবর ২০২০ BSTI’র ৩৪তম কাউন্সিল সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। নতুন পণ্যগুলো নিয়ে মান যাচাই করে মান সনদ নেয়া পণ্যের সংখ্যা এখন ২২৭টি।
আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন যারাঃ
ড. মো. ওয়াজেদ আলী খান (মৃত্যু ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০):
বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) সাবেক মহাপরিচালক এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। কর্মজীবনে তিনি বিটিভি’র মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (BPSC) সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এডভোকেট মাহবুবে আলম (১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯-২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০):
তিনি ছিলেন ১৫তম অ্যাটর্নি জেনারেল। ১৯৭৫ সালে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে কাজ শুরু করেন। ১৩ জানুয়ারি ২০০৯ তিনি রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর আমৃত্যু ঐ দায়িত্বে ছিলেন তিনি। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন তিনি। পদাধিকার বলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলেরও চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।
ব্যারিস্টার রফিক–উল–হক (২ নভেম্বর ১৯৩৫-২৪ অক্টোবর ২০২০):
‘আইনের বাতিঘর’ হিসেবে খ্যাত সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। ৭ এপ্রিল- ১৭ ডিসেম্বর ১৯৯০ পর্যন্ত তিনি দেশের ষষ্ঠ অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে তিনি কোনো সম্মানী গ্রহণ করেননি। তিনি যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আইনি লড়াই করেছেন, তেমনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে লড়েছেন। দেশের ইতিহাসে আইন পেশায় এমনটি বিরল। মানবতাবাদী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ২৫টিরও বেশি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তার জীবনের উপার্জিত অর্থের প্রায় সবই তিনি ব্যয় করেছেন সমাজসেবায়।
রশীদ হায়দার (১৫ জুলাই ১৯৪১-১৩ অক্টোবর ২০২০)
প্রখ্যাত লেখক, কথাশিল্পী, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও বাংলা একাডেমির সাবেক পরিচালক ও নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।
পুরো নাম : শেখ ফয়সাল আবদুর রশীদ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন হায়দার।
সাহিত্য কর্ম
♦ রশীদ হায়দার গল্প, উপন্যাস, নাটক, অনুবাদ, নিবন্ধ, স্মৃতিকথা ও সম্পাদনা- সব মিলিয়ে ৭০ এর অধিক বই রচনা করেন।
প্রকাশিত গ্রন্হ
♦ উপন্যাস : সাধ আহলাদ, অসম বৃক্ষ, যদি দেখা পাও, চিম্বুকের নিচে আলোর আভা, তিনটি প্রায়োপন্যাস।
♦ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস : খাঁচায় (১৯৭৫), অন্ধ কথামালা (১৯৮০), নষ্ট জোছনায় এ কোন অরণ্য (১৯৮২)।
♦ গল্পগ্রন্হ : ননকুর বোধি (১৯৬৭), অন্তরে ভিন্ন পুরুষ (১৯৭৩), মেঘেদের ঘরবাড়ি (১৯৮২), উত্তরকাল (১৯৮৭), তখন (১৯৮৭), আমার প্রেমের গল্প (১৯৮৮), পূর্বাপর (১৯৯৩), মুক্তিযুদ্ধের নির্বাচিত গল্প (১৯৯৯), বাবার গল্প (১৯৯৯), সীমা পরিসীমা (২০০১), গন্তব্যে (২০০২), যুদ্ধ ও জীবন (২০০৫)।
♦ শিশু সাহিত্য: গোলাপের জন্ম (১৯৯৭), গোলাপ গোলাপ (১৯৭৮), যদি দেখা পাও (১৯৮১), পুনর্জন্ম (১৯৯২), জসীমের নকশি কাঁথা (২০০১), শোভনের স্বাধীনতা (২০০২), আমার স্কুল।
♦ অনুবাদ : কাঠগড়া (১৯৮৪)।
♦ স্মৃতিকথা : ও বেলা এ বেলা (১৯৯৩)।
♦ সম্পাদনা : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্হ (১৯৮৫), স্মৃতি’৭১ [১-১৩ খন্ড] (১৯৮৮-২০০০), ভয়াবহ অভিজ্ঞতা (১৯৮৯), খুঁজে ফিরি (২০০০)।
♦ অন্যান্য গ্রন্হ : বাংলাদেশের খেলাধুলা (১৯৯৪), বাঙালির তীর্থভূমি (১৯৯৯)।
♦ প্রাপ্ত সম্মননা: অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার (১৯৮২), হুমায়ুন কাদির পুরস্কার (১৯৮৭), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪), একুশে পদক (২০১৪)।